উগান্ডায় জমকালো আয়োজনে বিয়ের অনুষ্ঠান হল নিউইয়র্কের মেয়র প্রার্থী মামদানির

ডেস্ক রিপোর্ট
  ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৫:২৩

উগান্ডার রাজধানী কাম্পালার অভিজাত এলাকা বুজিগা হিল গত সপ্তাহজুড়ে আলোচনায় ছিল একটি বিলাসবহুল বিয়ের আয়োজনকে কেন্দ্র করে। বিয়ের আয়োজন ছিল তিন দিনব্যাপী, অতিথি আপ্যায়ন, গান-বাজনা ও ভোজে মুখরিত ছিল পুরো এলাকা। এই আয়োজনের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের মেয়র পদে ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী জোহরান মামদানি।
৩৩ বছর বয়সী মামদানি ২৭ বছর বয়সী রামা দুয়াজির সঙ্গে ডেটিং অ্যাপে পরিচয়ের মাধ্যমে প্রেমে জড়ান। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে দুবাইয়ে তাদের বাগদান হয়। এরপর ফেব্রুয়ারিতে নিউইয়র্কে একটি ছোট পরিসরের অনুষ্ঠানে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তবে মূল আয়োজনটি হয় কাম্পালায়। গত মঙ্গলবার শুরু হয়ে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলে এই জমকালো অনুষ্ঠান। রোববারই মামদানি উগান্ডায় পৌঁছান।
উগান্ডাতেই মামদানির জন্ম। মাত্র সাত বছর বয়সে পরিবারসহ যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। ২০১৮ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। কাম্পালার বুজিগা হিলে যে বিলাসবহুল বাড়িতে বিয়ের আয়োজন হয়, সেটি তার বাবা মাহমুদ মামদানির। ৭৮ বছর বয়সী মাহমুদ একজন বিশিষ্ট অধ্যাপক। মামদানির মা মীরা নায়ার (৬৭) আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্র নির্মাতা।
বুজিগা হিল এলাকায় উগান্ডার বহু ধনাঢ্য ব্যক্তি বসবাস করেন। বিয়ের উপলক্ষে মামদানিদের বাড়িতে সাজসজ্জায় ছিল নজরকাড়া আয়োজন। গাছপালা সাজানো হয় রঙিন আলোয়, ভেসে আসে সংগীতের সুর। প্রথম দিনেই মার্সিডিজ, রেঞ্জ রোভারসহ নামীদামি গাড়িতে ভরে যায় বাড়ির চত্বর।
অনুষ্ঠানে ছিল কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা। একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ‘বাড়ির বাইরে ২০ জনের বেশি বিশেষ নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য ছিলেন। অনেকের মুখে ছিল মুখোশ। ফোন জ্যামার বসানো ছিল। মূল ফটকে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন নয়জন।’ সাধারণত এলাকাটিতে এমন নিরাপত্তা নজিরবিহীন।
বৃহস্পতিবার ছিল অনুষ্ঠানের চূড়ান্ত দিন। ভারতীয় সংস্কৃতির ছাপ ছিল বিয়ের রীতিতে। পরিবেশন করা হয় বিভিন্ন ধরনের ফলের জুস, চলছিল নাচ-গান। অতিথিদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন মামদানি। অনুষ্ঠান শেষ হয় মধ্যরাতের দিকে। শুক্রবার সকালে তাবু খুলে নেওয়া হয়, ফুলগুলো স্তূপ করে রাখা হয় বাড়ির ফটকের পাশে।
তবে এই উৎসবমুখর আয়োজনের বিপরীতে পাশের বাড়ির অনেকেই ছিলেন শোকে মুহ্যমান। কারণ, ১৪ জুলাই মারা যান সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি জর্জ কানইয়েইহামবা। তার বাড়ি মামদানিদের বাড়ির কাছেই। একজন প্রতিবেশী বলেন, ‘তার মরদেহ এখনো সমাহিত হয়নি। স্বজনেরা আসছেন শ্রদ্ধা জানাতে। এই সময়ে তিন দিন ধরে বিয়ের উৎসব করলেন মামদানি।’
অনুষ্ঠান নিয়ে রাজধানীর অনেক বাসিন্দাই জানতে পারেননি ভেতরে কী ঘটছে। এক কাম্পালা বাসিন্দা বলেন, ‘আমরা শুনেছি মামদানি নিউইয়র্কের মেয়র হতে যাচ্ছেন। এখন কি আমাদের যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার ভিসা পাওয়া সহজ হবে? মামদানি যেভাবে গেছেন, আমরাও কি সে পথ ধরতে পারব?’