জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে এনসিপির অসন্তোষ

ডেস্ক রিপোর্ট
  ০৫ আগস্ট ২০২৫, ২৩:২৪

জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর মধ্যে। দলে মতানৈক্য না থাকলেও অনুষ্ঠানের আয়োজনে পক্ষপাতিত্ব ও ঘোষণাপত্রে দলের দাবির প্রতিফলন না থাকায় একাধিক নেতা প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানিয়েছেন।
দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, 'ঘোষণাপত্রের অনুষ্ঠান ম্যানেজমেন্ট নিয়ে আমাদের দলের নেতারা কিছু প্রশ্ন তুলেছেন। যেহেতু আমাদের অধিকাংশ নেতা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে উঠে এসেছেন, অনেক শীর্ষ নেতা এনসিপি হিসেবে নয়, বরং সমন্বয়ক হিসেবে দাওয়াত পেয়েছেন। কিন্তু ১৫৮ জন সাবেক সমন্বয়কের সবাই দাওয়াত পাননি, তাই অনেকেই অনুষ্ঠান বর্জন করেন।'
তবে ঘোষণাপত্র নিয়ে দলে মতানৈক্য রয়েছে কি না—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, 'না, এ নিয়ে মতানৈক্য হয়নি। বরং আমরা সম্মিলিতভাবে বলেছিলাম ঘোষণাপত্রে ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামকে আরও গুরুত্বের সঙ্গে উপস্থাপন করা হোক। কেউ কেউ প্রস্তাব করেছিলেন ৫ আগস্টকে নিউ রিপাবলিক বা সেকেন্ড রিপাবলিক ঘোষণার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে। কিন্তু এসব কিছুই রাখা হয়নি।'
তিনি আরও বলেন, 'পরবর্তীতে সংসদের সংশোধিত সংবিধানের তফসিলে এই ঘোষণাপত্র সংযোজনের কথা বলা হলেও সেখানে বলা হয়নি, পরবর্তী নির্বাচন জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে হতে হবে—যা আমরা স্পষ্টভাবে দাবি করেছিলাম। কিন্তু সেগুলো উপেক্ষিত হয়েছে। বিএনপি যেভাবে বলেছে, সেভাবেই ঘোষণাপত্র তৈরি করা হয়েছে। আমাদের অবস্থান পরিষ্কার—আগামীর নির্বাচন হতে হবে সনদের ভিত্তিতে।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনসিপির এক নেতা জুলাই ঘোষণাপত্রকে 'গ্রহণযোগ্য নয়' বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, 'এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ ঘোষণাপত্রে যা আছে, তা আমাদের পার্টির দাবির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।'
এনসিপির সংস্কার সমন্বয় কমিটির সদস্য ও যুগ্ম আহ্বায়ক জাভেদ রাসিন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'এ বিষয়ে পার্টির মধ্যে আলোচনা চলছে। খুব শিগগিরই সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।'
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, 'আমাদের দলের পক্ষ থেকে নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল অনুষ্ঠানে গিয়েছিল। দলীয়ভাবে অনুষ্ঠান বর্জনের সিদ্ধান্ত ছিল না। ঘোষণাপত্র ভালোই হয়েছে, তবে সেটি যদি ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে কার্যকর হতো, তাহলে আরও ভালো হতো।'
তিনি আরও বলেন, 'ব্যক্তিগত জায়গা থেকে নৈতিক কারণে আমি অনুষ্ঠানে যাইনি। কারণ শহীদ পরিবার, আহত ভাইদের যথাযথ মূল্যায়ন এবং ১৫৮ জন সাবেক সমন্বয়কের স্বীকৃতি—এসব বিষয় একরকমভাবে উপেক্ষিত হয়েছে।'
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে আগামী সংসদকে ২ বছরের সময় দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, 'জুলাই জাতীয় সনদ প্রণয়ন হলে তখন সেটি নিয়ে কথা বলবো।'