মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন কর ও ব্যয় বিল নিয়ে নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করলেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। এই 'ন্যাক্কারজনক' বিল রাষ্ট্রীয় ঘাটতি আরও তীব্র করবে বলে মঙ্গলবার (৩ জুন) মত প্রকাশ করেন স্পেস এক্স ও টেসলার প্রধান নির্বাহী (সিইও)। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তিনি লিখেছেন, আমি দুঃখিত (এই কথা বলার জন্য), তবে আমি এটি (বিল) আর মেনে নিতে পারছি না। বিশালকার, যাচ্ছেতাই, আবর্জনা ভরা কংগ্রেশনাল বিলটি কেবল একটা জঘন্য কীর্তি। এর পক্ষে যারা ভোট দিয়েছেন, তারা জানেন কাজটি ভালো করেননি। আপনারা জানেন।
গত মাসে মাত্র এক ভোটের ব্যবধানে হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভসে বিলটি অনুমোদিত হয়। কংগ্রেশনাল বাজেট কার্যালয়ের মতে, এটি কার্যকর হলে ইতোমধ্যে ৩৬ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন সরকারি ঋণের বোঝার ওপর আরও বাড়তি ৩ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ডলারের শাকের আঁটি যুক্ত হতে পারে।
আগের মেয়াদেও ব্যাপক কর ছাড়ের একটি বিল নিয়ে যথেষ্ট উদ্যোগী ছিলেন ট্রাম্প। সেই বিলের বিস্তৃত রূপ হিসেবে নতুন প্রস্তাবটি তৈরি করা হয়েছে।
সিনেটর স্টিভ ডেইনস জানিয়েছেন, মার্কিন করনীতি দেখভালের দায়িত্বে থাকা সিনেট ফাইন্যান্স কমিটির রিপাবলিকান সদস্যরা ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করতে বুধবার বিকেলে হোয়াইট হাউজে আসছেন। ব্যবসা সংক্রান্ত করছাড় স্থায়ীকরণের বিষয়টি তাদের আলোচ্যসূচিতে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এই দাবি মেনে নেওয়া হলে সরকারের ব্যয় আরও ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাবে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের সরকারি সক্ষমতা বিভাগের (ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি বা ডোজে) প্রধানের পদ ছেড়ে দেওয়ার এক সপ্তাহ পার না হতেই এমন মন্তব্য করে বসলেন মাস্ক। সরকারের বিশেষ কর্মী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর রাষ্ট্রীয় ব্যয় সংকোচনে তার ব্যাপক অঙ্গীকারের প্রায় কিছুই তিনি অর্জন করতে পারেননি।
এরমধ্যে ট্রাম্পের বহুল আকাঙ্ক্ষিত এই বিলের প্রকাশ্যে বিরোধিতা করে বসলেন তিনি। বিশ্লেষকদের ধারণা, এই বক্তব্যের মাধ্যমে মার্কিন রাজনীতিতে মাস্কের প্রভাব যাচাই করা যাবে।
সর্বশেষ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রচারণা এবং অন্য রিপাবলিকানদের জন্য প্রায় ৩০ কোটি ডলার খরচ করেছিলেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। তবে প্রশাসন থেকে সরে যাওয়ার পর তিনি জানান, রাজনৈতিক ব্যয় সংকুচিত করবেন তিনি।
বাজেটের বিষয়ে রক্ষণশীল একাধিক রিপাবলিকান মাস্কের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন বলে জানা গেছে। ফলে, নতুন কর বিল কার্যকর হতে ট্রাম্পের কিছু ঝক্কিঝামেলা পোহানো লাগতে পারে।
অবশ্য, মাস্কের মন্তব্য নিয়ে চিন্তিত নন অন্য রিপাবলিকানরা। সিনেটের রিপাবলিকান সদস্য জন থুন বলেছেন, বিলের ব্যয় নিয়ে মাস্কের সঙ্গে তিনি একমত নন এবং আগামী মাসের চার তারিখ বিল অনুমোদনে তিনি সমর্থন দেবেন।
মাস্কের বক্তব্য উড়িয়ে দিয়েছেন রিপাবলিকান হাউজ স্পিকার মাইক জনসন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, আমার বন্ধু ইলন সম্পূর্ণ ভুলভাল বকছেন।
হোয়াইট হাউজ পক্ষ থেকে মাস্কের বক্তব্য খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। এর আগে মাস্কের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র ক্যারোলিন লিয়াভিট বলেছেন, দেখুন, মাস্কের অবস্থান প্রেসিডেন্ট জানেন। তবে এতে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে কোনও পরিবর্তন আসবে না। এটা অসাধারণ একটা বিল এবং প্রেসিডেন্ট এতে অটল থাকছেন।