পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে শনিবার (১১ অক্টোবর) গভীর রাতে তীব্র গোলাগুলি হয়েছে। কাবুলে পরিচালিত পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ড্রোন হামলার জবাবে তালেবানের তরফ থেকে এ হামলা চালানো হয়। নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বরাতে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
পাকিস্তানের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সীমান্তবর্তী পোস্টে আফগানিস্তান থেকে গুলি চালিয়ে উসকানি দেওয়া হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় তাদের বাহিনী পুরো শক্তি নিয়ে পাল্টা জবাব দেয়।
সীমান্তবর্তী এলাকায় ছয়টির বেশি স্থানে উভয়পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়। পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কামান ও ভারী অস্ত্রের কারণে রাতের আকাশ আলোকিত হয়ে উঠেছে।
উল্লেখ্য, দুদেশের মধ্যে সীমান্তবর্তী এলাকার দৈর্ঘ্য প্রায় দু হাজার ৬০০ কিলোমিটার।
এদিকে, পাকিস্তানের তিনটি সীমান্ত পোস্ট দখলের দাবি করেছে তালেবান। অন্যদিকে, পাকিস্তানি কর্মকর্তারা কয়েকটি আফগান পোস্ট ধ্বংসের দাবি করছেন।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত, সংঘর্ষ শেষ হয়েছে কিনা সে বিষয়ে পাকিস্তানের তরফ থেকে কোনও আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেওয়া হয়নি।
তালেবান সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইনায়াতুল্লাহ খোয়ারাজমি বলেছেন, শনিবার মধ্যরাতের দিকে অভিযানটি শেষ হয়। এটি ছিল আকাশসীমা লঙ্ঘনের প্রতিশোধ।
তিনি সতর্ক করে বলেন, পাকিস্তান আবার আফগান আকাশসীমা লঙ্ঘন করলে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী কঠোর জবাব দিতে প্রস্তুত।
কিছুদিন আগে কাবুলে সশস্ত্র গোষ্ঠীর এক নেতাকে লক্ষ্য করে হামলা চালানোর অভিযোগ রয়েছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাকিস্তানি তালেবানের এক শীর্ষ নেতাকে লক্ষ্য করে কাবুলে বিমান হামলা চালানো হয়েছিল। তবে তিনি বেঁচে গেছেন কিনা তা নিশ্চিত নয়। ইসলামাবাদ আগেই সতর্ক করে কাবুলকে বলেছিল যে তাদের ‘ধৈর্যের সীমা শেষ হয়েছে’।
ইসলামাবাদের অভিযোগ, তালেবান প্রশাসন পাকিস্তানি তালেবান (টিটিপি) জঙ্গিদের আশ্রয় দিচ্ছে। এই গোষ্ঠী ভারতের সহায়তায় পাকিস্তানে হামলা চালায়। তবে নয়াদিল্লি এ অভিযোগ বরাবর অস্বীকার করে আসছে। অন্য দেশে হামলার জন্য আফগান ভূমি ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না বলে দাবি করেছে তালেবান।
পাকিস্তানের নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের অভিযোগ, তালেবান ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই তাদের দেশে জঙ্গি হামলার সংখ্যা বেড়েছে।
এদিকে, চলমান উত্তেজনার মধ্যেই ভারত সফরে ছিলেন তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। ২০২১ সালে তারা ক্ষমতায় আসার পর এটাই ছিল প্রথম উচ্চ সর্বোচ্চ পর্যায়ের বৈঠক। দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহ দেখে আরও অস্বস্তিতে পড়েছে পাকিস্তান।