কুয়েতের পরিচ্ছন্নতা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ‘ক্যাপ টেক’-এ কর্মরত ১৩০ জন বাংলাদেশি শ্রমিক চার মাস ধরে বেতন না পাওয়ায় কর্মবিরতিতে গেলে দেশটির আইন অনুসারে তাদের আটক করে প্রত্যাবাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
কুয়েতের শ্রম আইনে ধর্মঘট নিষিদ্ধ হওয়ায় শ্রমিকদের বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসন জানায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সৈয়দ তারেক হোসেন জানান, এরই মধ্যে কোম্পানিটি কিছুসংখ্যক বাংলাদেশি শ্রমিককে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। শ্রমিকদের অবস্থান ও দাবিদাওয়া নিয়ে কুয়েত সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে দূতাবাস যোগাযোগ রাখছে।
রাষ্ট্রদূত জানান, রোববার দূতাবাসের জরুরি হটলাইনে শ্রমিকদের গ্রেপ্তারের তথ্য জানানো হলে, শ্রম মিনিস্টার আবুল হোসেনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সংশ্লিষ্ট থানায় যান। সেখানে শ্রমিকদের কাছ থেকে জানা যায়, তারা গত মার্চ মাস থেকে কোনো বেতন পাননি। এর প্রতিবাদে ২১ জুলাই থেকে তারা কর্মবিরতি পালন করে আসছিলেন।
পরদিন শ্রমিকরা কুয়েতের ফান্তাস থানায় আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর থানার নির্দেশে বাংলাদেশিসহ অন্যান্য দেশের শ্রমিকদের ডেকে নেওয়া হয় এবং পরে সবাইকে প্রত্যাবাসন কেন্দ্রে (ডিপোর্টেশন সেন্টার) পাঠানো হয়।
এদিকে, ক্যাপ টেক কোম্পানির মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি দাবি করেন, তার এক ব্যবসায়িক অংশীদার শ্রমিকদের বেতনের অর্থ নিয়ে আত্মগোপন করেছেন। মালিকপক্ষ এক মাসের বেতন পরিশোধ করে বাকি বেতন তিন কিস্তিতে দেওয়ার প্রস্তাব দিলে শ্রমিকরা তা প্রত্যাখ্যান করেন।
রাষ্ট্রদূত জানান, কোম্পানির সঙ্গে পূর্বেও বেতনসংক্রান্ত বিরোধ দেখা দিলে ২০২৪ সালের নভেম্বরে দূতাবাসের হস্তক্ষেপে তা সমাধান হয়েছিল। তবে এবার শ্রমিকেরা আগেভাগে দূতাবাসকে কিছু জানায়নি, যার ফলে দূতাবাস তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিতে পারেনি।
বর্তমান পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের দেশে ফেরত পাঠানোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ দূতাবাস এ প্রেক্ষাপটে কুয়েতের পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র এবং জনশক্তি কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়েছে।
রাষ্ট্রদূতের মতে, এখন পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক সাড়া মেলেনি। তবে শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে দূতাবাস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।