দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়ার বিষয়ে একমত জামায়াত

ডেস্ক রিপোর্ট
  ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ২১:৪৯

এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়ার বিষয়ে সংস্কার কমিশন যে প্রস্তাব দিয়েছে, তাতে একমত পোষণ করেছে জামায়াতে ইসলামী।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর বৈঠক শেষে এ কথা জানান দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের।
ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, আমরা আজ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করতে ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল এখানে এসেছি। আমরা দীর্ঘ সময় আলোচনার পরও আমাদের আলোচনা অসমাপ্ত রয়েছে। বিষয়গুলো খুব পটেনশিয়ালি বের হয়ে আসা উচিত, এজন্য আমরা তাড়াহুড়ো করছি না।
তিনি আরও বলেন, আজ অনেকগুলো বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা (জামায়াতে ইসলামী) কিছু কিছু বিষয়ে একমত হতে পেরেছি৷ কিছু কিছু বিষয়ে আমরা তাদের (ঐকমত্য কমিশন) প্রস্তাব দিয়েছি। সেটা উনারা বিবেচনার জন্য রেখেছেন। কিছু কিছু বিষয়ে আমাদের আরও আলোচনার প্রয়োজন। সেজন্য সেগুলো আমরা পরের আলোচনার জন্য রেখেছি।
তিনি আরও বলেন, যে কয়টি বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি, তার ভেতরে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। অর্থাৎ দশ বছরের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না।
তিনি আরও বলেন, দুই নম্বর আমরা একমত হয়েছি, আর্টিকেল ৭০ এর কিছু অ্যামেন্ডমেন্টসহ উনাদের (ঐকমত্য কমিশন) প্রস্তাবের সঙ্গে। সেটি হচ্ছে, সংবিধান পরিবর্তন, অর্থবিল বা বাজেট অনুমোদন এবং আস্থা ভোট ছাড়া বাকি যেকোনো বিষয়ে একজন সংসদ সদস্য যেকোনো দলের ও মতের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) প্রস্তাবের সঙ্গে নীতিগতভাবে একমত হয়েছি। কিন্তু পাওয়ার এবং অথোরিটির জন্য আরও আলোচনার প্রয়োজন। আমরা সেটি বলেছি। উনারাও আলোচনার জন্য অগ্রসর হয়েছেন। যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে অন্তর্ভুক্ত করে এনসিসি গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সেখানে তারা রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতির কথা বলেছেন। আমরা তাতে না বলেছি। উনারা দুজন রাষ্ট্রের দুটি জায়গার সর্বোচ্চ জায়গায় আছেন। দেশে জরুরি অবস্থায় অনেক সময রাষ্ট্রপতির কাছে ধরনা দিতে হয়, অনেক সময় জুডিশিয়াল সিদ্ধান্তের প্রয়োজন হয়। তাই উনাদের কমিটির ভেতর অন্তর্ভুক্ত না করাই ভালো হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা শুরু থেকেই যে সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছি, সেখানে আমরা পিআর সিস্টেমে নির্বাচনের কথা বলেছি। তার মানে সারাদেশে একসঙ্গে নির্বাচন হবে মার্কা বা দলের ভিত্তিতে। সারাদেশে যে দল যে পরিমাণ ভোট পাবে, সেই পরিমাণে সংসদে আসন নির্ধারিত হবে। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের নির্বাচনে যে দুর্নীতি, জবরদখল হচ্ছে এবং ভোটবিহীন নির্বাচনের যে ফলাফল হচ্ছে, এটি তখন বন্ধ হয়ে যাবে। টাকার খেলাও বন্ধ হয়ে যাবে
তিনি বলেন, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট নির্বাচনের বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। ক্ষমতার ভারসাম্যের জন্য আমরা এতে একমত হয়েছি।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে ছিলেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান।
জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ড. হামিদুর রহমান আযাদ, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল অংশ নেন।