যুক্তরাষ্ট্রে ২৩০ বছর পর বন্ধ হচ্ছে এক সেন্টের মুদ্রা উৎপাদন

ডেস্ক রিপোর্ট
  ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৫৬

ফিলাডেলফিয়া মিন্ট আগামী বুধবার শেষবার এক সেন্ট মুদ্রার শেষ ব্যাচ তৈরি করবে। এর মধ্যে দিয়ে ২৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে উৎপাদনের ইতিহাসের সমাপ্তি ঘটবে। ১৭৯৩ সালে শুরু হয়েছিল মার্কিন পেনি উৎপাদন।
সরকার জানিয়েছে, মুদ্রাগুলোর লেনদেন চলমান থাকলেও নতুন করে আর তৈরি হবে না।
ব্যবসাগুলো ইতিমধ্যেই দাম সামঞ্জস্য করতে শুরু করেছে। কারণ তারা বলেছে, পয়সা খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে উঠছে। সরকারের মতে, এই পদক্ষেপে রাষ্ট্রীয় ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই পরিকল্পনা ঘোষণা করে ফেব্রুয়ারিতে বলেছিলেন, ‘আমাদের দেশের বাজেট থেকে অপচয় দূর করতে হবে, যদি তা এক পেনি করেও হয়।
বর্তমানে গৃহযুদ্ধকালীন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের প্রতিকৃতিযুক্ত এই কয়েনগুলো তামা-আবৃত দস্তা দিয়ে তৈরি হয়। তবে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে একটি পেনি তৈরি করতে প্রায় ৪ সেন্ট খরচ হয়। এটি গত এক দশক আগের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। উৎপাদন বন্ধের মাধ্যমে সরকার বছরে প্রায় ৫৬ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করতে পারবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, এখন ইলেকট্রনিক লেনদেনের যুগে পেনির প্রয়োজনীয়তা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। ১৭৯৩ সালে প্রথম প্রচলিত এই কয়েন আজ কার্যত অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। ট্রেজারির হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে প্রায় ৩০০ বিলিয়ন পেনি প্রচলনে আছে, যা বাণিজ্যের প্রকৃত চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি। তবে এসব কয়েনের বড় অংশই ব্যবহারের বাইরে। 
২০২২ সালের এক সরকারি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মানুষ এগুলোকে অপ্রয়োজনীয় বা বিনিময়ের অনুপযুক্ত মনে করায় ব্যবহার করে না।
তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, ব্যবসাগুলো এখন দাম নিচের বদলে উপরের দিকের পূর্ণ সেন্টে দাম নির্ধারণ করছে। ফলে ক্রেতাদের খরচ কিছুটা বেড়ে যেতে পারে। রিচমন্ড ফেডারেল রিজার্ভের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, এই পরিবর্তনের ফলে মার্কিন ভোক্তাদের বছরে প্রায় ৬ মিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত ব্যয় হতে পারে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ‘নিকেল’, যার মান পাঁচ সেন্ট হলেও প্রতিটি তৈরি করতে খরচ হয় প্রায় ১৪ সেন্ট।
রিচমন্ড ফেডের গবেষণা অনুযায়ী, নিকেল উৎপাদন বন্ধ করা হলে এর প্রভাব আরো বড় হবে, যা মার্কিন ভোক্তাদের বছরে প্রায় ৫৫ মিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত ব্যয়ে ফেলতে পারে।
সূত্র : বিবিসি