মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা কখনোই গোপন করেননি। গতকালও তিনি দাবি করেছেন, প্রথম ও দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি বিশ্বের আটটি বড় সংঘাতের সমাধান করেছেন—এর মধ্যে রয়েছে গাজার যুদ্ধও।
তবে তার এই দাবির বেশিরভাগই অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি বা সাময়িক সমঝোতা চুক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত, দীর্ঘমেয়াদি শান্তি চুক্তির নয়।
এ বছরের শুরুতে ইসরাইল-ইরান ১২ দিনের যুদ্ধে তার ভূমিকা কিছুটা স্পষ্ট হলেও, অন্যান্য ক্ষেত্রে তা প্রশ্নবিদ্ধ। উদাহরণস্বরূপ, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমানোর কৃতিত্ব ট্রাম্প নিজের নামে নিলেও, নয়াদিল্লি তা নাকচ করেছে।
এছাড়া মিশর ও ইথিওপিয়ার মধ্যে গ্র্যান্ড ইথিওপিয়ান রেনেসাঁস বাঁধ (জিইআরডি) নিয়ে যে টানাপোড়েন চলছিল, তাতেও কোনো কার্যকর সাফল্য দেখাতে পারেননি ট্রাম্প। আবার প্রথম মেয়াদে সার্বিয়া ও কসোভোর মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে যে ‘বিস্তৃত চুক্তির’ দাবি তিনি করেছিলেন, তার অনেক ধারাই বাস্তবায়িত হয়নি।
নোবেল শান্তি পুরস্কার না পেয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র স্টিভেন চিউং এক্স–এ লিখেছেন, ট্রাম্প একজন প্রকৃত মানবতাবাদী। তার মতো ইচ্ছাশক্তিসম্পন্ন মানুষ আর নেই, যিনি একাই পাহাড় সরাতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, নোবেল কমিটি প্রমাণ করেছে, তারা শান্তির চেয়ে রাজনীতিকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, নোবেল কমিটি শেষ পর্যন্ত পুরস্কার দিয়েছে ভেনিজুয়েলার বিরোধী রাজনীতিক মারিয়া কোরিনা মাচাদোকে। নোবেল শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান জোর্গেন ওয়াটনে ফ্রায়ডেন্স বলেছেন, দীর্ঘ ইতিহাসে নোবেল কমিটি এ ধরনের (ট্রাম্পের মতো) ক্যাম্পেইন ও মিডিয়ার উত্তেজনা দেখেছে। এছাড়া নোবেল কমিটির কাছে প্রতি বছর হাজার হাজার চিঠি আসে। কিন্তু নোবেল শুধু পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তির কাজের ওপর নির্ভর করে এবং আলফ্রেড নোবেলের করা উইল অনুযায়ী দেওয়া হয়।
এছাড়াও নোবেলের জন্য মনোনয়নের শেষ তারিখ ৩১ জানুয়ারি। এ বছর নোবেলের জন্য ট্রাম্পকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, পাকিস্তান, আজারবাইজান, রুয়ান্ডা ও কম্বোডিয়ার সরকার। তবে এগুলো জানুয়ারির শেষ তারিখের পর জমা পড়ায় তিনি এবার নোবেল পাননি। তবে সেগুলো ২০২৬ সালের আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত হবে। অর্থাৎ, ট্রাম্পের নাম ইতিমধ্যেই ২০২৬ সালের নোবেল আলোচনার তালিকায় রয়েছে।
সূত্র: আল-জাজিরা