২০২৬ সালের শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের দৌড়ে ট্রাম্প?

ডেস্ক রিপোর্ট
  ১০ অক্টোবর ২০২৫, ২২:৩০

২০২৫ সালের শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জিততে ব্যর্থ হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার পুরস্কারটি পেয়েছেন ভেনিজুয়েলার বিরোধী রাজনীতিক মারিয়া কোরিনা মাচাদো। তবে ট্রাম্পের সামনে এখনো সুযোগ আছে—আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালে এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার জয়ের।

কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ
নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়া ট্রাম্পের জন্য বড় অর্জন। তিনি নিজেও প্রকাশ্যে জানিয়েছেন, পুরস্কারটি না পেলে তা হবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘বড় অপমান’। ২০০৯ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন—যা ট্রাম্পকে বিরক্ত করেছিল। ২০২৪ সালের এক নির্বাচনী সমাবেশে ট্রাম্প বলেছিলেন, ওবামাকে নোবেল দিল, সে নিজেই জানে না কেন পেয়েছে!

নোবেল দেওয়ার প্রক্রিয়া
প্রতি বছর নরওয়ের সংসদ কর্তৃক নিযুক্ত পাঁচ সদস্যের নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের বিজয়ী নির্ধারণ করে।
জাতীয় সংসদ সদস্য, সরকারপ্রধান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক আদালতের সদস্য ও আগের বিজয়ীরাও প্রার্থী মনোনয়ন দিতে পারেন। সাধারণত মনোনয়নের শেষ তারিখ জানুয়ারির ৩১ তারিখ, যদিও কমিটি প্রথম বৈঠকে অতিরিক্ত নাম যোগ করতে পারে। বিজয়ী নির্ধারণ হয় অক্টোবরের শুরুতে, যা চূড়ান্ত।

ট্রাম্পের মনোনয়ন জটিলতা
২০২৫ সালের নোবেলের জন্য ট্রাম্পকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, পাকিস্তান, আজারবাইজান, রুয়ান্ডা ও কম্বোডিয়ার সরকার। তবে এগুলো জানুয়ারির শেষ তারিখের পর জমা পড়ায় সেগুলো ২০২৬ সালের আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত হবে। অর্থাৎ, ট্রাম্পের নাম ইতিমধ্যেই ২০২৬ সালের নোবেল আলোচনার তালিকায় রয়েছে।

গাজা যুদ্ধবিরতি ও নতুন সম্ভাবনা
সম্প্রতি ইসরাইল সরকার ট্রাম্প সমর্থিত গাজা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে, যা হামাসও মেনে নিয়েছে। এই চুক্তি অনুযায়ী, হামাস তাদের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্তি দেবে এবং ইসরাইল আংশিকভাবে সেনা প্রত্যাহার করবে। যদি এই যুদ্ধবিরতি টিকে থাকে, তবে এটি ট্রাম্পের নোবেল পাওয়ার যুক্তিকে আরও শক্তিশালী করতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতামত
ব্রিটেনের পোর্টসমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কিন রাজনীতি বিশ্লেষক ডাফিড টাউনলে বলেন, ট্রাম্প বিশ্বাস করেন তিনি পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য, তার দাবি যে তিনি সাতটি যুদ্ধ থামিয়েছেন—তা বেশ অতিরঞ্জিত। যদি গাজা যুদ্ধবিরতি টেকসই শান্তি চুক্তিতে রূপ নেয়, তবে তার ২০২৬ সালে কিছুটা সুযোগ থাকতে পারে। তবে প্রশ্ন থেকেই যায়—নিজ দেশের ভিন্নমত দমন করতে সেনা নামানো কোনো নেতাকে শান্তিতে নোবেল দেওয়া উচিত কি না।

আগামীর সম্ভাবনা
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প ২০২৬ সালের শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের প্রার্থী হবেন—এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। তবে তিনি চূড়ান্ত তালিকায় জায়গা পাবেন কি না, তা নির্ভর করবে নোবেল কমিটির সিদ্ধান্তের ওপর এবং গাজা যুদ্ধবিরতি টেকসই শান্তিতে রূপ নেয় কি না তার ওপর।

সূত্র: নিউজউইক