২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলার পর বিষাক্ত ধুলাবালিতে আক্রান্ত হওয়া হাজারো মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে গঠিত ‘ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার হেলথ প্রোগ্রাম’ এখন গভীর সংকটে পড়েছে। বাজেট ঘাটতি ও স্বাস্থ্যকর্মী ছাঁটাইয়ের কারণে কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় হাজারো রোগীর জীবন হুমকির মুখে।
জানা গেছে,প্রোগ্রামটির আওতায় বর্তমানে ১ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিবন্ধিত। যা ২০১৫ সালের তুলনায় দ্বিগুণ। অনেকেই শ্বাসকষ্ট, মানসিক ট্রমা এবং অন্তত ৬৯ ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকিতে রয়েছেন। অথচ কর্মী সংকটে এখন অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেতে ৬ থেকে ৮ মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে রোগীদের।
সম্প্রতি মার্কিন সরকার দুই দফায় প্রোগ্রামটির চিকিৎসক ও নার্সদের ছাঁটাই করেছে। প্রথম দফায় বরখাস্ত হওয়া ১৬ জনকে চাপে ফের নেওয়া হলেও, এপ্রিল মাসে আবারও ১৬ জন কর্মী বরখাস্ত করা হয়েছে। ফলে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে।
আইনজীবী মাইকেল বারাসচ বলেন, এই প্রোগ্রামটি শুধু জীবন বাঁচায় আর কিছুই না। এটি বন্ধ হয়ে গেলে মৃত্যু অনিবার্য।
২০০৬ সালে নিউইয়র্ক পুলিশের গোয়েন্দা জেমস জাড্রোগার মৃত্যুর পর এই প্রোগ্রামের আইনগত ভিত্তি তৈরি হয়। পরে ২০১৫ সালে এটি স্থায়ীভাবে অনুমোদিত হয় ‘জেমস জাড্রোগা ৯/১১ হেলথ অ্যান্ড কম্পেনসেশন অ্যাক্ট’র মাধ্যমে। তবে রোগীর সংখ্যা ও চিকিৎসা ব্যয় বাড়লেও বাজেট সে অনুযায়ী বাড়ানো হয়নি।
প্রোগ্রাম রক্ষায় কংগ্রেসে একটি দ্বিদলীয় বিল (এইচআর ১৪১০) উত্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু এখনও তা পাস হয়নি। সাবেক ৯/১১ সাড়া-প্রদাতা ও ফিয়েলগুড ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা জন ফিয়েল বলেন, এটা রাজনীতির বিষয় নয়, এটা মানবতার প্রশ্ন। আমরা থামবো না যতক্ষণ না সরকার তাদের দায়িত্ব পালন করে।
সারা যুক্তরাষ্ট্রের মানুষকে প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আইন পাসের জন্য চাপ তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন বারাসচ। ‘আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, এই সম্প্রদায়কে আমরা ভুলে যাব না,’ তিনি বলেন।
স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগ (এইচএইচএস) জানিয়েছে, কর্মসূচি এখনো চালু রয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধীরগতি চলতে থাকলে তা প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে।