বাণিজ্যশুল্ক নিয়ে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা মূল্যায়ন করছে বলে জানিয়েছে চীন। আজ ২ মে (শুক্রবার) দেশটি বলেছে, এ ধরনের আলোচনা শুরুর আগে ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে ‘আন্তরিকতা’ দেখাতে হবে এবং বৈশ্বিক বাজার ও সরবরাহ ব্যবস্থায় অস্থিরতা সৃষ্টি করা শুল্কগুলো বাতিল করতে হবে।
বেইজিং থেকে এএফপি জানায়, চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপ করেছে, যা এপ্রিলে কার্যকর হয়। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে চীনও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যে ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত নতুন শুল্ক আরোপ করেছে।
তবে স্মার্টফোন, সেমিকন্ডাক্টর ও কম্পিউটারের মতো উন্নত প্রযুক্তিপণ্য আপাতত যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক থেকে অব্যাহতি পেয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার দাবি করে আসছেন, চীন আলোচনার জন্য এগিয়ে এসেছে। চলতি সপ্তাহেও তিনি বলেছেন, ‘চুক্তি হওয়ার খুব ভালো সম্ভাবনা রয়েছে।’
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় শুক্রবার নিশ্চিত করেছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব পেয়েছে এবং তা ‘বর্তমানে মূল্যায়ন করা হচ্ছে’।
তবে মন্ত্রণালয় বলেছে, যেকোনো ধরনের আলোচনার জন্য প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘আন্তরিকতা’ দেখাতে হবে।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি আলোচনায় আগ্রহী হয়, তাহলে তাদের আন্তরিক মনোভাব প্রদর্শন করতে হবে, নিজেদের ভুল নীতি সংশোধনের প্রস্তুতি নিতে হবে এবং একতরফা শুল্ক বাতিল করতে হবে।’
মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, ‘যেকোনো সম্ভাব্য সংলাপ বা আলোচনায় যদি যুক্তরাষ্ট্র তার ভুল একতরফা শুল্কনীতি সংশোধন না করে, তাহলে এর অর্থ হবে তারা সম্পূর্ণরূপে আন্তরিক নয় এবং এর ফলে পারস্পরিক আস্থা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সতর্ক করে বলেছে, ‘কথা এক, আর কাজ আরেক হলে কিংবা আলোচনার আড়ালে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা করা হলে তা কোনো ফল দেবে না।’
এদিকে বিশ্বের অনেক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছাতে জুলাইয়ের মধ্যে ৯০ দিনের সময়সীমার মুখে রয়েছে। তা না হলে এসব দেশের জন্য দেশভিত্তিক উচ্চ শুল্ক কার্যকর হবে। তবে বেইজিং জানিয়েছে, প্রয়োজনে তারা শেষ পর্যন্ত বাণিজ্যযুদ্ধ লড়বে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা এক ভিডিওতে জানিয়েছে, ‘আমরা কখনোই নতজানু হব না!’
তবে চীন স্বীকার করেছে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতা তাদের রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতিকে চাপে ফেলেছে এবং বিদেশমুখী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
এপ্রিলে কারখানার উৎপাদন হ্রাস পাওয়ার তথ্য প্রকাশ পেয়েছে এ সপ্তাহে। বেইজিং বলেছে, বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ‘হঠাৎ পরিবর্তনের’ ফলেই এমনটা হয়েছে। তবে মার্চে শুল্ক কার্যকরের আগে রপ্তানি ১২ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে, কারণ অনেক প্রতিষ্ঠান শুল্ক আরোপের আগেই পণ্য পাঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে।