১
টেস্ট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিসিআই) জানিয়ে রেখেছিলেন আগেই। তা নিয়ে সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে গণমাধ্যমে। তবে ভক্তদের কেউ কেউ মনেপ্রাণে চেয়েছিলেন বিরাট কোহলি যেন আরও কিছুদিন টেস্ট ক্রিকেট খেলেন।
যে কারণে তারা তাকিয়ে ছিলেন বিসিসিআইয়ের দিকে। বোর্ড কোহলিকে অনুরোধ করে অবসরের সিদ্ধান্ত থেকে সরিয়ে আনতে পারে কি না, সেটিই দেখার অপেক্ষায় ছিলেন ভক্তরা।
কিন্তু না। কোহলি নিজের সিদ্ধান্তেই অটল থাকলেন। আজ সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবেই টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করলেন ভারতীয় দলের কিংবদন্তি এই ব্যাটার। কোহলির ট্স্টে অবসরের মধ্য দিয়ে ভারতের সাদা পোশাকের ক্রিকেটে গৌরবময় এক যুগের পরিসমাপ্তি ঘটলো।
সোমবার সকালে সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে কোহলি বলেন, টেস্ট ক্রিকেটে প্রথমবার ব্যাগি ব্লু (ভারতের টেস্ট ক্যাপ) পরেছিলাম ১৪ বছর আগে। সত্যি বলতে আমি কখনও কল্পনাও করিনি এই ফরম্যাট আমাকে এমন এক সফরে নিয়ে যাবে। এটা আমাকে পরীক্ষায় ফেলেছে, গড়ে তুলেছে আর এমন সব শিক্ষা দিয়েছে যা সারাজীবন সঙ্গে থাকবে।’
‘সাদা জার্সিতে খেলার মধ্যে একটা গভীর ব্যক্তিগত অনুভূতি আছে। নিঃশব্দ পরিশ্রম, দীর্ঘ দিনগুলোর লড়াই, এমন সব ছোট ছোট মুহূর্ত যা কেউ দেখে না, কিন্তু মনের গভীরে চিরদিন থেকে যায়।’
কোহলি আরও লেখেন, ‘আমি যখন এই ফরম্যাট থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি, এটা সহজ নয়—তবে মনে হচ্ছে এটাই সঠিক সময়। আমি এই খেলায় আমার সবটুকু দিয়েছি। এটা আমাকে তার চেয়েও অনেক বেশি ফিরিয়ে দিয়েছে। আমি কৃতজ্ঞতায় পূর্ণ এক হৃদয় নিয়ে সরে দাঁড়াচ্ছি এই খেলা থেকে।সতীর্থ এবং প্রত্যেকটি মানুষের জন্য যারা আমাকে এই যাত্রায় মূল্যবান অনুভব করিয়েছেন। আমি সব সময় হাসিমুখেই আমার টেস্ট ক্যারিয়ারকে স্মরণ করবো।’
২০১১ সালের ২০ জুন কিংসটনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় কোহলির। এরপর ১৪ বছরের গৌরবময় ক্যারিয়ারে ১২৩টি টেস্ট খেলেন, যার ৬৮টিতে অধিনায়ক হিসেবে খেলে ৪৬.৮৫ গড়ে করেছেন মোট ৯ হাজার ২৩০ রান।
তবে সম্প্রতি টেস্ট ফরম্যাটে সময়টা খুব ভালো যাচ্ছিলো না কোহলির। ২০২৪ সালের নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পার্থ টেস্টে অপরাজিত ১০০ রানের ইনিংসটি ছিল ২০২৩ সালের জুলাইয়ের (ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে, পোর্ট অব স্পেনে) প্রথম টেস্ট শতক।
২০১৯ সালে কোহলির ব্যাটিং গড় ৫৫.১০ পর্যন্ত উঠেছিল। ওই সময় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পুনেতে ক্যারিয়ারসেরা ২৫৪* রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। কিন্তু গত ২৪ মাসে সেই গড় নেমে এসেছে ৩২.৫৬ তে।
রোহিত শর্মার আগে ভারতের টেস্ট অধিনায়ক ছিলেন কোহলি। তার অধীনে ভারত ৬৮ ম্যাচে ৪০টি জিতেছিল, হেরেছিল মাত্র ১৭টি। ৪০টি জয় কোহলিকে ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। যেখানে মহেন্দ্র সিং ধোনির ছিল ৬০ ম্যাচে ২৭ জয়ের রেকর্ড। আর সৌরভ গাঙ্গুলির ছিল ৪৯ ম্যাচে ২১ জয়।