ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। দু্ই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে বেশ কয়েকবার গোলাগুলির খবরও পাওয়া গেছে। এদিকে গেল কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশের সঙ্গেও ভারতের সম্পর্কের অবনতি ঘটছে।
সীমান্তবর্তী দুই দেশের সঙ্গে উত্তেজনার জেরে পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে ভারতকে। যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ক্রিকেটে।
২০০৮ সাল থেকেই দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে পাকিস্তান সফরে যায় না ভারত। এবার রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলিদের বাংলাদেশেও না পাঠানোর চিন্তা করছে ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিসিসিআই)। এক সূত্রের বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’।
আগামী আগস্টের মাঝামাঝিতে বাংলাদেশে সাদা বলের সিরিজ খেলতে আসার কথা ভারতীয় ক্রিকেট দলের। সূচিও চূড়ান্ত। ১৭ থেকে ৩১ আগস্টের মধ্যে ৬টি সীমিত ওভারের ম্যাচ (৩টি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি) খেলার কথা রোহিত-সূর্যকুমার যাদবদের।
কিন্তু সূত্র টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছে, বাংলাদেশ সফর নিয়ে এখনো কোনো পরিকল্পনা হাতে নেয়নি বিসিসিআই। এমনকি এই সফর বাতিলের সম্ভাবনাও প্রবল।
সূত্র বলছে, ‘এই সফর পূর্বনির্ধারিত হলেও এখনও কিছুই চূড়ান্ত নয়। বর্তমান পরিস্থিতির কারণে ভারতের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য বাংলাদেশ সফরে না যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।’
কেউ কেউ ধারণা করছেন, বিডিআর কমিশনের প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) এএলএম ফজলুর রহমানের একটি বিতর্কিত মন্তব্যের পরই ভারতীয় ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর নিয়ে আগ্রহ কমেছে বিসিসিআইয়ের।
কয়েকদিন আগে এক ফেসবুক পোস্টে ফজলুর রহমান বলেছিলেন, ‘ভারত পাকিস্তান আক্রমণ করলে বাংলাদেশের উচিত হবে উত্তর পূর্ব ভারতের সাত রাজ্য দখল করে নেওয়া। এ ব্যাপারে চীনের সাথে যৌথ সামরিক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা শুরু করা প্রয়োজন বলে মনে করি।’
যদিও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ফজলুর রহমান দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে কোনোভাবেই একমত পোষণ করে না সরকার। বরং এটি তার ব্যক্তিগত অভিমত।
রাজনৈতিক কারণে ভারতের সিরিজ কিংবা ম্যাচ বাতিলের সিদ্ধান্ত এশিয়া কাপ ২০২৫ আসরকেও ক্ষতিগ্রস্থ করবে বলে ধারণা করছেন ক্রিকেট বিশ্লেষকরা। কেননা আগামী সেপ্টেম্বরে এই টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনো ভেন্যু চূড়ান্ত হয়নি।
ভারত যেহেতু পাকিস্তানের মাটিতে ক্রিকেট খেলতে যায় না, তাই সম্পূর্ণ টুর্নামেন্ট পাকিস্তানে হওয়া সম্ভব নয়। একই কারণে ভারতও এককভাবে আয়োজক হওয়ার যোগ্যতা হারিয়েছে।
ভারত-পাকিস্তান পাল্টাপাল্টির মধ্যে ভালো সমাধান হতো পারতো বাংলাদেশ। সেক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ভেন্যু হিসেবে বাংলাদেশকে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু ভারতীয় দল যদি বাংলাদেশ সফরও বন্ধ করে দেয়, তাহলে নিরপেক্ষ ভেন্যু খুঁজে বের করাই কঠিন হয়ে যাবে।