টেক্সাসের প্রাণকেন্দ্র অস্টিনে অনুষ্ঠিত হলো বাংলাভাষা ও সাহিত্যচর্চার অনন্য এক উৎসব—গ্লোবাল ভিলেজ অস্টিন বইমেলা ২০২৫। 
রোববার (২২ জুন) ‘দ্য ক্লাব অ্যাট ওয়েলস পয়েন্ট’ মিলনায়তনে দিনব্যাপী এই বইমেলার উদ্বোধন করেন জনপ্রিয় লেখক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা সাদাত হোসাইন।
ঐতিহ্যবাহী শোভাযাত্রা এবং বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে যোগ হয় এক বিশ্বজনীন আবহ। মেলার মূল উদ্যোক্তা ‘রিদম অব গ্লোবাল ভিলেজ’-এর প্রেসিডেন্ট এবং ‘কালের চিঠি’র সম্পাদক বিমল সরকার স্বাগত বক্তব্যে সবাইকে স্বাগত জানান।
ডালাস থেকে যোগ দেন লেখক ফরহাদ হোসেন। পরিচয়পর্বে উপস্থাপিকা আদিবা চৌধুরী একে একে পরিচয় করিয়ে দেন আমন্ত্রিত লেখক-লেখিকাদের। প্রধান অতিথি সাদাত হোসাইনকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন গ্লোবাল ভিলেজের উপদেষ্টা প্রফেসর ডা. ফিরোজা তালুকদার। এরপর ফিতা কেটে বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা লেখকদের নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন সাদাত হোসাইন। এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকেও লেখকের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক মাত্রা পায়। বইমেলার অন্যতম আকর্ষণ ছিল শিল্পী মুনিরা প্রীতুর একক সংগীতানুষ্ঠান, যেখানে তিনি পরিবেশন করেন সাদাত হোসাইনের লেখা গান।
শিশুচত্বরে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, খেলাধুলা ও মেধা যাচাই কার্যক্রমে সরগরম ছিল পরিবেশ। ছোটদের সৃজনশীলতার ঝলক ছিল চোখে পড়ার মতো।
বইমেলায় অংশ নেয় বাংলা একাডেমি, অনন্যা, কথা প্রকাশ, কালের চিঠি, অন্যধারা এবং কলকাতার দেজ প্রকাশন। স্টলজুড়ে ছিল নতুন বইয়ের পাশাপাশি গত শতকের শ্রেষ্ঠ গ্রন্থসমূহের সমাহার। এক পাঠক বললেন, “এ যেন অস্টিনে একুশে বইমেলার ছায়া।”
প্রশ্নোত্তর পর্বে পাঠকেরা সরাসরি কথা বলেন লেখক সাদাত হোসাইনের সঙ্গে। প্রফেসর হায়দরী আকবরের সঞ্চালনায় “গল্পের পেছনের গল্প” ছিল মেলার আরেক আকর্ষণীয় আয়োজন।
“বৈষম্যহীন সমাজ ও শান্তিপূর্ণ পৃথিবী নির্মাণে নিরন্তর সৃজনশীলতার জন্য কাজ করছেন”—এই বিবেচনায় গ্লোবাল ভিলেজ গ্লোবাল রিসার্চ সেন্টার থেকে সাদাত হোসাইনকে প্রদান করা হয় ‘গ্লোবাল ভিলেজ সাহিত্য পদক ২০২৫’। এই সম্মাননা প্রতিবার একজনকেই দেওয়া হয়। পদকের সঙ্গে দেওয়া হয় উত্তরীয় ও সম্মাননা ক্রেস্ট।