দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ঐতিহ্যবাহী বুড়া চিন্তামন ঘোড়ার মেলা শুরু হয়েছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার আলাদিপুর ইউনিয়নের মেলাবাড়ি মাঠে ১৫ দিনব্যাপী মেলার উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধনের পর ঘোড়া বেচাকেনার শুরু হয়। মেলায় আগত ঘোড়া ব্যবসায়ীদের ঘোড়ার অংশগ্রহণে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ঘোড়দৌড় দেখতে বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসেন নানা বয়সী নারী-পুরুষ।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বৈশাখ মাসের ১৩ তারিখ থেকে ফুলবাড়ী উপজেলার আলাদিপুর ইউনিয়নের মেলাবাড়ি মাঠে ঐতিহ্যবাহী বুড়া চিন্তামন ঘোড়ার মেলা বসে। মেলাটি অন্তত ১৫ দিন স্থায়ী হয়। তবে স্থানীয়ভাবে গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া তেমন বেচাকেনা না হলেও ঘোড়া বেচাকেনা হয়ে থাকে। এ কারণে এটি বুড়া চিন্তামন ঘোড়ার মেলা নামে দেশব্যাপী পরিচিত লাভ করেছে।
জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার সুখনগরি থেকে ঘোড়া নিয়ে এসেছেন আব্দুর রহিম, জহুরুল ইসলাম ও সামিউল ইসলাম। তারা জানান, ছোট-বড় মিলিয়ে ১৪টি ঘোড়া নিয়ে বুড়া চিন্তামন মেলায় এসেছেন। এগুলোর দাম রেখেছেন সর্বনিম্ন ৭ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা। এরমধ্যে ২-১ হাজার টাকা কমবেশি হতে পারে। সারাবছর দেশের বিভিন্ন স্থানের ঘোড়ার মেলায় ঘোড়া নিয়ে যান বেচাবিক্রি করতে। ঘোড়া বেচাকেনা করেই তার জীবন চলে।
জেলার ধামইরহাট উপজেলার সদরের বাসিন্দা ঘোড়া ব্যবসায়ী শামসুল আলম বলেন, বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় মেলায় বিক্রির জন্য ছোটবড় সাতটি ঘোড়া এনেছি। আকারভেদে দাম চান ৭ থেকে ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু ক্রেতারা ৫ থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে দাম বলছেন। তাই এখন পর্যন্ত একটি ঘোড়াও বিক্রি করতে পারিনি। ১৯৯০ সাল থেকে এ মেলায় ঘোড়া বেচাবিক্রি হয়ে থাকে।
আলাদিপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান দছিম উদ্দিন মণ্ডল বলেন, এ বুড়া চিন্তামন ঘোড়ার মেলাটি দেশব্যাপী ব্যাপক পরিচিত। প্রতিবছর মেলা শুরুর আগ থেকে ঘোড়া বেচাকেনা শুরু হয়। প্রতি বছর বৈশাখ মাসে মেলাটি শুরু হয়।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহম্মেদ চৌধুরী খোকন বলেন, সর্বস্তরের মানুষ মুক্তমনে মেলা উপভোগ করছেন। মেলার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
ফুলবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম খন্দকার মহিব্বুল বলেন, মেলায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ঘোড়া ব্যবসায়ীরা এসেছেন। মেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ কাজ করছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইসহাক আলী বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে অনুমোদনপ্রাপ্ত ঘোড়ার মেলায় উপজেলা প্রশাসন থেকে সার্বিক নজরদারি রয়েছে। যাতে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।