আজকের শিল্পীরা কেবল পর্দায় নয়, সমাজের বাস্তব প্রশ্নগুলোতেও মুখ খুলছেন। অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন তেমনই এক কণ্ঠ—যিনি শুধুমাত্র সাহসী চরিত্রেই নয়, ব্যক্তিগত বিশ্বাসেও অকপট। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রায়ই দেখা যায় তাঁকে নানা সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়ে মন্তব্য করতে, যা কখনো প্রশংসিত হয়, আবার কখনো সমালোচনার জন্ম দেয়।
সম্প্রতি ফেসবুকে দেওয়া একটি পোস্টে বলিউড নির্মাতা বিশাল ভরদ্বাজের সঙ্গে তাঁর একটি আলাপ প্রকাশ করেন বাঁধন। আলোচিত নেটফ্লিক্স সিনেমা ‘খুফিয়া’-তে অভিনয় প্রসঙ্গে এই কথোপকথনটি হয়, যেখানে বাঁধনের নেওয়া কিছু সাহসী সিদ্ধান্ত ও তাঁর রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি উঠে আসে।
আলাপে বিশাল ভরদ্বাজ বলেন, আজমেরী, যখন সবাই না বলেছিল, তখন তুমি কেন এই ছবিতে কাজ করতে রাজি হলে?’ (জানা যায়, এই চরিত্রটির জন্য নুসরাত ইমরোজ তিশা, বিদ্যা সিনহা মিম ও মেহজাবীন চৌধুরীর কাছে প্রস্তাব গিয়েছিল, কিন্তু তাঁরা রাজি হননি।)
উত্তরে বাঁধন বলেন,‘স্যার, টাবুকে চুমু খাওয়ার সুযোগ কে মিস করবে?’ তবে সঙ্গে সঙ্গে তিনি ব্যাখ্যা করেন, ‘আমরা দুজনেই হেসেছিলাম। কিন্তু সত্যি বলতে, আমি আপনার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইনি। আমি একজন শিল্পী, আমার ভয় বা সীমাবদ্ধতা থাকা উচিত নয়। আমি চরিত্রটি পছন্দ করেছি।’
পরবর্তী প্রশ্নে ভরদ্বাজ জানান, ছবিটির স্ক্রিপ্টে থাকা ‘জামাত’ শব্দ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন অনেকে, কেউ কেউ চুম্বনের দৃশ্যে রাজি হননি। তখন বাঁধন বলেন, ‘স্যার, আমি সমকামী নই। তবে আমি বিশ্বাস করি, প্রত্যেকেরই স্বাধীনভাবে জীবনযাপনের অধিকার আছে। আমি আমার দেশকে ভালোবাসি। আমি কখনোই চাই না জামায়াত বা কোনো চরমপন্থি গোষ্ঠী আবার ক্ষমতায় আসুক।’
আলাপের শেষদিকে বিশাল ভরদ্বাজ বলেন, ‘আমি এই চরিত্রের জন্য সঠিক মানুষকেই বেছে নিয়েছি। তোমার সঙ্গে কাজ করে আমি খুবই খুশি।’
বাঁধনের এই স্পষ্ট ও নির্ভীক অবস্থান সামাজিক মাধ্যমে ইতোমধ্যেই আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সাহসী চরিত্রে অভিনয় করা, স্পষ্ট মত প্রকাশ এবং চরমপন্থার বিরুদ্ধে তাঁর অবস্থান বহু দর্শকের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।