জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার পর হানাদার পাকিস্তানী বাহিনীর হাতে বন্দী হয়ে গেলে যে রাজনৈতিক নেতার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয় বাংলাদেশের প্রথম সরকারের প্রধানমন্ত্রী সেই তাজউদ্দীন আহমদের শততম জন্মদিন ছিল ২৩ জুলাই ২০২৪। অর্থাৎ সেদিন এই ক্ষণজন্মা মানবের শততমজন্মবর্ষের সূচনা হয়েছে।
তাজউদ্দীন আহমদের জন্মশতবর্ষ উদ্যাপনের জন্যে মুক্তিযুদ্ধে তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোদ্ধা ব্যারিস্টার এম আমীর উল-ইসলামকে আহ্বায়ক করে ৭৩ সদস্যবিশিষ্ট ‘তাজউদ্দীন আহমদ জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন পরিষদ’ গঠন করা হয় এ বছরের মধ্য জুনে। মুক্তিযোদ্ধাসহ তাজউদ্দীন আহমদের সাথী, পরিবার ও অনুরাগীরা রয়েছেন এই পরিষদে।
বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ও মুক্তির দীর্ঘ সংগ্রামে যে সুযোগ্য সহকর্মীদের সাথে পেয়ে নেতৃত্বের এক জ্যোতিষ্কমণ্ডলী গড়ে তুলতে পেরেছিলেন তাঁদের অন্যতম প্রধান ব্যক্তি ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ। তাজউদ্দীন আহমদের পাণ্ডিত্য, ইতিহাস জ্ঞান, দূরদর্শিতা ও প্রজ্ঞা ছিল অনন্য। যার প্রকৃত বিচ্ছুরণ দেখা যায় নেতা ‘মুজিব ভাই’-এর স্বাধীনতা ঘোষণার পর থেকে শত্রুশিবির হতে নেতাকে ফিরিয়ে আনা পর্যন্ত ৯ মাস যুদ্ধ পরিচালনা, শরণার্থী ব্যবস্থাপনা, কূটনৈতিক তৎপরতা, বিরুদ্ধস্রোত প্রতিরোধসহ তাজউদ্দীনের প্রতিটি কর্মকাণ্ডে। স্বাধীনতার পরেও অর্পিত দায়িত্ব পালনে তিনি ছিলেন সৎ, নীতিনিষ্ঠ, আদর্শ ও দেশপ্রেমে বলিয়ান। তাই শততমজন্মবর্ষে দাঁড়িয়ে আমরা মাথা উঁচু করে তাকিয়ে তাঁকে দেখি।
তাঁর নীতি, আদর্শ, স্বদেশচিন্তা ও কর্ম সম্পর্কে জনগণকে বিশেষভাবে নতুন প্রজন্মকে পরিচিত করাতে ‘তাজউদ্দীন আহমদ জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন পরিষদ’ বর্ষব্যাপী দেশের ৬৪ জেলাসহ বহির্বিশ্বের বাংলাদেশের মানুষ অধ্যষিত বিভিন্ন শহরে তাজউদ্দীন জয়ন্তী পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
দেশের সাম্প্রতিক অস্থির পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই উদ্যাপন পরিষদ ঢাকা ও অন্যান্য জেলা শহরে শতবর্ষ উদ্যাপনের আনুষ্ঠানিকতা আয়োজন করবে।
আগামী ৩ নভেম্বর রোববার বিকেলে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের জুইস সেন্টার মিলনায়তনে বিকেল ঠিক সাড়ে ৫টায় ‘বাংলার মুক্তিসরণি ও তাজউদ্দীন আহমদ’ শীর্ষক আয়োজনের মধ্য দিয়ে বর্ষব্যাপী অনুষ্ঠানের সূচনা করা হবে। অনুষ্ঠানে জেল হত্যায় নিহত শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের প্রতীকী সাংস্কৃতিক উপস্থাপনা, প্রবন্ধপাঠ, চিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র উপস্থাপিত হবে।
গণমাধ্যমসহ সকলকে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এবং অনুষ্ঠান সফলে পরিষদ সকল মহলের উদার সহযোগিতা কামনা করছে। - প্রেস বিজ্ঞপ্তি