সম্প্রতি রাজধানীর কাকরাইলে হামলায় আহত গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। অথচ তাকে সুস্থ দেখানোর ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ করেছেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।
তিনি বলেন, নুরুল হক নুর এখনো পর্যন্ত পুরোপুরি সুস্থ হননি। তিনি যে অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, যে সমস্যা ও সংকট নিয়ে এসেছিলেন, এখনো সেই সমস্যা ও সংকট বিদ্যমান। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আহত নুরকে দেখতে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এদিকে, দুপুরে নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি ভিডিও পোস্ট করে তার ক্যাপশনে রাশেদ বলেন, ‘আজ ভিপি নুরকে দেখতে এসে দেখি, আমার সামনেই নাক দিয়ে এভাবে জমাটবাধা রক্ত বের হলো!’
১৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিও ক্লিপে অসুস্থ নুরকে অনেকেটা বিমর্ষ অবস্থায় দেখা যায় এবং তার হাতে থাকা একটি টাওলে একদলা জমাটবাধা রক্ত দেখা যায়।
গণধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান জানিয়েছেন, নুরুল হক নুরের ওপরে যে হামলা হয়েছে তা হত্যার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। তিনি বলেন, নুরুল হক নুরের শারীরিক অবস্থা এখনো গুরুতর এবং গতকাল হাসপাতাল থেকে বলা হয়েছে যে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ, সেই কথার কোনো সত্যতা নেই। নুরুল হক নূর এখনও পরিপূর্ণ সুস্থ হননি। তাকে সুস্থ দেখানোর জন্য পরিকল্পনা চলছে।
নুরের নাক থেকে এখনো জমাটবাধা রক্ত বের হচ্ছে উল্লেখ করে রাশেদ খান বলেন, সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালের ডিরেক্টরকে ফোন দেওয়া হয়। ডিরেক্টরসহ অন্যান্য ডাক্তারও আসেন। আমরা তার বর্তমান অবস্থার কথা জানাই এবং ডিরেক্টর নুরের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসার নির্দেশনা দেন। আমরা লক্ষ্য করেছি যে, গণমাধ্যমে বলা হয়েছে নুরুল হক নুর সুস্থ, কিন্তু বাস্তবে তিনি আগের অবস্থার মতোই রয়েছেন।
রাশেদ খান বলেন, নুরুল হক নুরের চোখের নিচে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে এবং মুখ দিয়ে কথা বলা সম্ভব হচ্ছে না। তার মুখের মাড়িতে প্রচণ্ড ব্যথা রয়েছে এবং ব্রেনে আঘাতের চিহ্ন থাকায় ব্রেনও ঠিকমতো কাজ করছে না। তিনি বলেন, আমি আজকের দেখা অনুযায়ী বলছি, নুরুল হক নুরকে হত্যা করার উদ্দেশ্যেই আঘাত করা হয়েছে।
নুরের ওপর যে হামলা হয়েছে তা নিয়ে পুরো জাতি একতাবদ্ধ জানিয়ে গণঅধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, এদেশের মানুষের চাওয়া হলো, যেভাবে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রমকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তেমনি জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলসহ ফ্যাসিবাদী দলগুলোর সাংগঠনিক কার্যক্রমও নিষিদ্ধ করতে হবে। এই ঘটনার সঙ্গে যুক্তদের ফুটেজ থাকা সত্ত্বেও এখনও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এটি সরকারের জন্য লজ্জার। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশনা ছাড়া এমন ঘটনা ঘটার সুযোগ নেই। গণধিকার পরিষদ মনে করে, নুরুল হক নুর এবং তার নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে প্রত্যাহার করা উচিত।
রাশেদ খান দাবি করেন, নুরুল হক নুরকে সুস্থ দেখানোর যে পরিকল্পনা চলছে, তা কোনো লাভ হবে না। নুরকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে যে হামলা হয়েছে, তার বিচার হওয়া উচিত। জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং যারা এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা প্রয়োজন। এ সময় নুরুল হক নুরকে হাসপাতালে দেখতে আসা সবাইকে ধন্যবাদ জানান।