চুনারুঘাটে শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রশ্নপত্র বিক্রির অভিযোগ

ডেস্ক রিপোর্ট
  ১৮ আগস্ট ২০২৫, ২৩:৩৯

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রদত্ত নীতিমালাকে অগ্রাহ্য করে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজনীন সুলতানার বিরুদ্ধে।
নীতিমালা অনুযায়ী, সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে প্রশ্নপত্র প্রণয়নের কাজ স্কুল/ক্লাস্টারভিত্তিক হওয়ার কথা থাকলেও শিক্ষা কর্মকর্তা নিজেই প্রশ্নপত্র তৈরি করে উচ্চমূল্যে শিক্ষকদের কাছে বিক্রি করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন।
শিক্ষকরা জানান, বিগত দিনগুলোতে ক্লাস্টারভিত্তিক প্রশ্ন তৈরি ও বিতরণ হলে এ বছর চুনারুঘাট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজনীন সুলতানা নীতিমালার তোয়াক্কা না করে নিজে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করেন। শিক্ষকরা নীতিমালার আলোকে কাজ করার কথা বললেও তিনি তা উপেক্ষা করেছেন। নিজ ক্ষমতা বলে তিনি প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করে শিক্ষকদের দিগুণ দামে প্রশ্নপত্র কিনে নেওয়ার জন্য রোববার সবাইকে অফিসে ডাকেন।
উপজেলার ১৭০টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রোববার দুপুরে উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে দ্বিতীয় প্রান্তিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করতে গেলে তাদের বলা হয় ১ম ও ২য় শ্রেণির জন্য ৮ টাকা এবং ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির জন্য প্রতি সেট প্রশ্নে ১৫ টাকা হারে পরিশোধ করতে হবে। এ নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। তারা সঙ্গে সঙ্গে এর প্রতিবাদ জানান এবং চড়া দামে প্রশ্নপত্র কিনে পরীক্ষা না নেওয়ার ঘোষণা দেন। পরে চাপের মুখে বাধ্য হয়ে ১ম ও ২য় শ্রেণির প্রশ্নপত্র ৫ টাকা ও ৩য় ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির প্রশ্নপত্র ৮ টাকা হারে দিতে বাধ্য হন।
এ বিষয়ে চুনারুঘাট উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাজনীন সুলতানার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিলেট বিভাগের সব জায়গাতেই প্রশ্নপত্র প্রণয়নের খরচ ৮ টাকা ও ১৫ টাকা হারে। শিক্ষকদের আপত্তির কারণে তিনি ৫ টাকা ও ৮ টাকা হারেই প্রশ্নপত্র প্রদান করেছেন। তবে অন্যান্য উপজেলায় ৮ টাকা ও ১৫ টাকা হারে নেওয়া হচ্ছে।
তিনি প্রশ্নপত্র এভাবে তৈরি করে বিক্রি করতে পারেন কিনা জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি। তিনি জানান, হবিগঞ্জ জেলার ভেতরে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করলে ফাঁস হয়ে যেতে পারে, তাই তিনি ঢাকা থেকে প্রণয়ন করেছেন।
শিক্ষকরা জানান, নাজনীন সুলতানা চুনারুঘাট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে যোগদানের পর থেকেই নিয়মিত গড় হাজিরা দেন। সপ্তাহে গড়ে ২ দিন অফিস করেন এবং কোনো কোনো সময় পুরো সপ্তাহেই অনুপস্থিত থাকেন। তিনি বিদ্যালয়ের স্লিপের বরাদ্দকৃত টাকার চেকে স্বাক্ষর নিতে ৫-১০ হাজার টাকা ঘুস নেন (এটিইওদের মাধ্যমে) বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাছাড়া বিভিন্ন বিদ্যালয়ে পরিদর্শন করে সিএনজি ভাড়ার কথা বলে টাকা নিয়ে থাকেন।
শিক্ষকদের চাকরি স্থায়ীকরণের জন্য জনপ্রতি মোটা অংকের টাকা নিয়ে দীর্ঘদিন পার হয়েছে অথচ এখনো স্থায়ীকরণের অনেক ফাইল অফিসে পড়ে রয়েছে। শিক্ষকদের উচ্চতর গ্রেডের কাজ করতেও মোটা অংকের টাকা উৎকোচ দাবি করেন। এতে শিক্ষকরা উনার চাহিদামতো বেশি টাকা দিতে না পারায় ফাইল আটকে রাখা হয়।