বাংলাদেশের ইসলামপন্থি সংগঠন ‘সালতানাত-ই-বাংলা’ কর্তৃক কথিত ‘বৃহত্তর বাংলাদেশ’ মানচিত্র প্রকাশ এবং তাতে ভারতের অংশ অন্তর্ভুক্ত থাকার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে ভারত সরকার। রাজ্যসভায় কংগ্রেস সাংসদ রণদীপ সিং সুরজেওয়ালার এক প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বিষয়টি লিখিত বিবৃতিতে তুলে ধরেন।
বিবৃতিতে জয়শঙ্কর বলেন, বাংলাদেশের ওই ইসলামি সংগঠনটির পেছনে তুরস্কভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘তুর্কি যুব ফেডারেশন’-এর মদদ রয়েছে বলে ভারত সরকার জানতে পেরেছে। মানচিত্রটি চলতি বছরের ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত একটি প্রদর্শনীতে প্রকাশ্যে প্রদর্শিত হয়। এতে ভারতের কিছু অংশকে বাংলাদেশ ভূখণ্ডের অংশ হিসেবে দেখানো হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর আরও বলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে এমন ঘটনাগুলোর প্রতি ভারত সরকার নজর রাখছে এবং দেশের স্বার্থ সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রক থেকেও এক বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারের ফ্যাক্ট-চেক প্ল্যাটফর্ম ‘বাংলাফ্যাক্ট’ এই সংগঠনের অস্তিত্ব অস্বীকার করেছে। তারা জানায়, ‘সালতানাত-ই-বাংলা’ নামে কোনও সংগঠনের কার্যক্রম বাংলাদেশে নজরে পড়েনি। তবে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে ‘পূর্ববর্তী বাংলা সালতানাত’ সম্পর্কিত একটি প্রদর্শনীতে সংশ্লিষ্ট মানচিত্রটি প্রদর্শিত হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
এই বিতর্ক আরও আলোচিত হয় যখন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম সামাজিক মাধ্যমে ভারতের একটি অংশসহ একটি মানচিত্র শেয়ার করেন। সমালোচনার মুখে তিনি পরে পোস্টটি সরিয়ে ফেলেন।
বিশ্লেষকদের মতে, বিষয়টি কেবল ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের দিক থেকে নয়, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক আলোচনাতেও প্রভাব ফেলতে পারে। যদিও বাংলাদেশ সরকার এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও মন্তব্য করেনি, তবে সরকারের ঘনিষ্ঠ মহল বিষয়টিকে ‘বিভ্রান্তিকর এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচার’ হিসেবে দেখছে।