প্রধান উপদেষ্টার যুক্তরাজ্য সফরে রাজনৈতিক উত্তাপ

হবে কি ইউনূস-তারেক বৈঠক?
ডেস্ক রিপোর্ট
  ০৫ জুন ২০২৫, ১১:৫৯

চার দিনের সরকারি সফরে যুক্তরাজ্য যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। 
তবে এ সফরকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে জল্পনা—বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সম্ভাব্য বৈঠক কি ঘটতে চলেছে?
বুধবার (৫ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিক বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার যাদের সঙ্গে বৈঠক বা দেখা হতে পারে, তা বিস্তারিত জানিয়েছি, কোনো লুকোছাপা করি নাই। আমার কাছে অন্তত এ বিষয়ে কোনো তথ্য নাই।”
তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যদি বিএনপি বা তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়, তাহলে এমন বৈঠকের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সেক্ষেত্রে সরকারিভাবেই বৈঠকের ব্যবস্থা করা হতে পারে।
১০ থেকে ১৩ জুন যুক্তরাজ্যে দ্বিপক্ষীয় সফর করবেন প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস। ৯ জুন ঢাকা ত্যাগ করে তিনি ১৪ জুন দেশে ফিরবেন। সফরের অংশ হিসেবে তিনি যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লস, প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
সফরের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে ‘কিং চার্লস থার্ড হার্মোনি অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ। রাজা চার্লসের কাছ থেকে এই পুরস্কার গ্রহণ করবেন প্রধান উপদেষ্টা ১২ জুন লন্ডনের সেন্ট জেমস’স প্যালেসে এক অনুষ্ঠানে। এই সম্মাননা পাচ্ছেন তিনি—মানুষ, প্রকৃতি ও পরিবেশের মধ্যে সঙ্গতিপূর্ণ সহাবস্থান এবং সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে বিশেষ অবদানের জন্য।
এছাড়াও ১১ জুন তিনি চ্যাথাম হাউসে একটি বিশেষ আলোচনায় অংশ নেবেন, যেখানে তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা, সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ তুলে ধরবেন। পাশাপাশি তিনি কমনওয়েলথ ও আন্তর্জাতিক সমুদ্র চলাচল সংস্থার মহাসচিবদের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
ব্রিটিশ হাইকমিশনের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, ইউনূসের এই সফরকে কেন্দ্র করে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বুধবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। আলোচনায় উঠে এসেছে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং রোহিঙ্গা ইস্যুতে সহযোগিতার বিষয়গুলো।
এদিকে, যুক্তরাজ্যে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়েও আলোচনা হতে পারে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “আমরা পাচার হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধারের জন্য যুক্তরাজ্যের সাথেও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”
যদিও ইউনূসের ব্যক্তিগত এ সফরকে সরকারি রূপ দেওয়া হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র সচিবের জবাব, “সরকারি সফর হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্যই। ফলে সেটিকে ব্যক্তিগত বলার কোনো সুযোগ নেই।”
সামগ্রিকভাবে এই সফরকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যকার ঐতিহ্যবাহী সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার একটি কৌশলগত সুযোগ হিসেবে দেখছে কূটনৈতিক মহল। তবে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে যে উত্তাপ সৃষ্টি হয়েছে, সেটি নজর কাড়ছে সবার।