মোবাইল ফোনে কথপোকথনের অডিও রেকর্ড 

পাঁচ লাখ টাকা দিলে মামলা থেকে নাম বাদ দেব

ডেস্ক রিপোর্ট
  ০৩ জুন ২০২৫, ২০:১৭

পাঁচ লাখ টাকা দিলে মামলার অভিযোগপত্র থেকে নাম বাদ দেওয়া হবে– প্রবাসীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাকের কাছে এভাবে টাকা চেয়েছেন নাটোরের গুরুদাসপুর থানার এসআই আবু জাফর মৃধা। মোবাইল ফোনে কথপোকথনের এ অডিও রেকর্ড পুলিশ সুপারের কাছে জমা দিয়েছেন ওই ব্যবস্থাপক।
জানা যায়, গত ১৫ মে চাঁচকৈড় বাজার এলাকায় ইটভাটা ব্যবসায়ী ফরিদ মোল্লার ছেলে রুবেল মোল্লাকে দুর্বৃত্তরা মারধর করে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন আমেরিকা প্রবাসী রাসেল হোসাইনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মচারী। এ কারণে ১৬ মে রাসেলকে ১ নম্বর আসামি করে গুরুদাসপুর থানায় মামলা করেন ফরিদ মোল্লা। তদন্তের দায়িত্ব পান থানার এসআই আবু জাফর মৃধা। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই তিনি রাসেলের প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ব্যবস্থাপক গোলাম রাব্বির কাছে ঘুষ দাবি করেন। গত ২ জুন গোলাম রাব্বিকে ফোন করে ফের পাঁচ লাখ টাকা চান।
টাকা দাবির অডিও রেকর্ডে এসআইকে বলতে শোনা যায়, ‘মামলা থেকে নাম বাদ দেব। চার-পাঁচ লাখ টাকা লাগবে। ঈদের আগে এক লাখ টাকা দিতে হবে। বাকি চার লাখ পড়ে দিয়েন। ১ নম্বর আসামির নাম বাদ দিতে হলে কয়েকটা দপ্তর আছে ভাই। বোঝেন তো। এমনও হতে পারে এসপি স্যার, সার্কেল স্যার ডাকতে পারে। ওসি স্যার তো ডাকবেই। ওসি স্যারকে নলেজে দিয়েই সব করতে হবে ভাই।’
ব্যবস্থাপক গোলাম রাব্বি বলেন, মারামারির মামলায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাসেল ভাইকে ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছেন। গত সোমবার রাতে ফোনে করে তিনি পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। ঘুষ দাবির অডিও রেকর্ড নাটোর পুলিশ সুপারের কাছে জমা দিয়েছি।
রাসেল হোসাইন বলেন, আমি দেশে নেই। অথচ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা মারধরের মামলায় আমাকে ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে। মামলা থেকে নাম কাটাতে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করা হচ্ছে। পুলিশ কর্মকর্তার এমন কাণ্ডে আমি হতবাক ও আতঙ্কিত। আমি এসআই আবু জাফরের মতো দুর্নীতিবাজ পুলিশ কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে কথা বলতে এসআই আবু জাফর মৃধার মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কেন টাকা চাইব? পাঁচ লাখ টাকা দাবির অডিও রেকর্ড আছে জানালে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।