সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সরকারি গেজেট বা কাগজপত্র আনুষ্ঠানিকভাবে পাওয়ার পর নির্বাচন কমিশন (ইসি) উপযুক্ত পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন।
গতকাল রোববার একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন সিইসি।
নাসির উদ্দীন বলেন, ‘আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারি সিদ্ধান্ত পাওয়ার পর সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেব। এ বিষয়ে সোমবার (আজ) একটি বৈঠক করা হবে। এরপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
পত্রিকা বা টেলিভিশন রিপোর্টের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না বলে মন্তব্য করেন সিইসি।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী লীগ ও এর নেতাদের বিচারকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ দলটির যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গত শনিবার রাতে নেয় অন্তর্বর্তী সরকার।
এ বিষয়ে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতা–কর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ লক্ষ্যে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত রয়েছেন, এমন ব্যক্তি বা সত্তার ও তাদের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করার বিধান যুক্ত করে সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫–এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয় গতকাল।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের এক বৈঠকে এই খসড়া অনুমোদন করে উপদেষ্টা পরিষদ। এতে সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বৈঠকের সারসংক্ষেপে বলা হয়, ‘কতিপয় সন্ত্রাসী কার্য প্রতিরোধ ও তাদের কার্যকর শাস্তির বিধানসহ আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিধান প্রণয়ন করার নিমিত্ত সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯ প্রণয়ন করা হয়।’
সারসংক্ষেপে আরও বলা হয়, ‘তবে বর্তমান আইনে কোনো সত্তার কার্যক্রম নিষিদ্ধকরণের বিষয়ে কোনো বিধান নেই। বিষয়টি স্পষ্টীকরণসহ বিধান সংযোজন আবশ্যক হেতু সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯–কে সময়োপযোগী করে আইনের অধিকতর সংশোধন সমীচীন ও প্রয়োজন।’
বর্ণিত পটভূমিতে সন্ত্রাসবিরোধী আইন সংশোধন করে সত্তার কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, প্রয়োজনীয় অভিযোজন করা এবং অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার নিষিদ্ধকরণের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।