হোয়াইট হাউসে ইলন মাস্কের চিৎকার-চেঁচামেচি

কারণ কী
ডেস্ক রিপোর্ট
  ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ০০:০৫

যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি দক্ষতা বিভাগের (ডিওজিই) প্রধান ইলন মাস্ক ও অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্টের মধ্যকার টানাপোড়েন চূড়ান্ত রূপ নিয়েছে। গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসের হলের ভেতর তাঁদের দুজনের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে। এ ঘটনা সম্পর্কে অবগত দুটি সূত্র দ্য নিউইয়র্ক পোস্টকে খবরটি নিশ্চিত করেছে।
দুজনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হওয়ার খবরটি প্রথম প্রকাশ করেছে এক্সিওস। এর প্রতিবেদনে বলা হয়, আইআরএস (অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সেবা) নিয়ে আলোচনার সময় মাস্ক ও বেসেন্ট তর্কে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে পরিস্থিতি এতটা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে দুজন পরস্পরের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কানে আওয়াজ পৌঁছানোর মতো দূরত্বে তাঁরা অবস্থান করছিলেন।
হোয়াইট হাউসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বলেছে, ইলন চিৎকার করছিলেন ও এলোমেলো কথা বলছিলেন। আর স্কট বেসেন্ট কোনোভাবেই তা মেনে নিচ্ছিলেন না।
সূত্রটি বলেছে, বেসেন্ট একই সঙ্গে সংস্কার ও স্থিতিশীলতা চান। আর ইলনের লক্ষ্য একটাই, সবকিছু ভেঙেচুরে সংস্কার প্রক্রিয়া চালানো।
সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, আলোচনার সময় মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিকও উপস্থিত ছিলেন। তাঁকে দেখে মনে হচ্ছিল তিনি ইলন মাস্কের পক্ষ নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেন, ‘এটা গোপন নয় যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এমন একটি দল গঠন করেছেন, যারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো নিয়ে গভীর আবেগপ্রবণ ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যেকোনো ভালো নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় মতভেদ থাকা স্বাভাবিক। আর চূড়ান্ত অর্থে সবাই জানে যে তাঁরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ইচ্ছানুযায়ীই দায়িত্ব পালন করছেন।’

হোয়াইট হাউসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপর একটি সূত্র বলেছে, সংস্কার নিয়ে মাস্ক ও বেসেন্টের দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতাকে কেন্দ্র করেই এ বিরোধ তৈরি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে মাস্ককে বেশি আক্রমণাত্মক ভঙ্গিমায় দেখা গেছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইলন মাস্কের প্রকাশ্য বিরোধে জড়ানোর ঘটনা এটাই প্রথম নয়। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট দিয়ে প্রকাশ্যে দাবি করেছিলেন যে মার্কিন অর্থমন্ত্রী হিসেবে হাওয়ার্ড লুটনিককে নিয়োগ দেওয়া উচিত। তাঁর মতে, লুটনিকই সত্যিকারের পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবেন। তবে ট্রাম্প শেষ পর্যন্ত বেসেন্টকে বেছে নেন।
গত নভেম্বরে মাস্ক লিখেছিলেন, ‘বেসেন্ট হলেন তেমন একজন, যাকে দিয়ে আগের মতোই কাজ চলবে। কিন্তু হাওয়ার্ড লুটনিক সত্যিকারের পরিবর্তন আনতে পারবেন। যেমন চলছে, তাতে যুক্তরাষ্ট্র দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের পরিবর্তনের দরকার।’
ট্রাম্প প্রশাসনের বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গেই বিতর্কে জড়িয়েছেন মাস্ক। এক্সে বাণিজ্য ও শিল্পবিষয়ক সিনিয়র কাউন্সিলর পিটার নাভারোর সঙ্গেও বিতণ্ডায় জড়িয়েছিলেন তিনি। সেখানে মাস্ক নাভারোকে ‘নির্বোধ’ বলে অভিহিত করেন।
এক্স পোস্টে মাস্ক লিখেছিলেন, ‘নাভারো একেবারেই নির্বোধ। তিনি এখানে যা বলেছেন, তা প্রমাণিত মিথ্যা।’

নিউইয়র্ক পোস্ট,ওয়াশিংটন