বাংলাদেশের ট্রায়াথলন তারকা ও প্রথম সার্টিফায়েড ট্রায়াথলন কোচ মিশু বিশ্বাস দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এখন যুক্তরাষ্ট্রে শিকাগো ম্যারাথন ও আয়রম্যান ৭০.৩ নিউইয়র্কে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বাংলাদেশের সীমিত পরিকাঠামো ও সুযোগ থাকা সত্ত্বেও মিশু বিশ্বাস তার প্রতিভা, অধ্যবসায় এবং আন্তর্জাতিক মানের মানসিকতা দিয়ে বিশ্বমঞ্চে এক অনন্য পরিচিতি তৈরি করেছেন। আজ তিনি কেবল একজন খেলোয়াড় নন, বাংলাদেশ ট্রায়াথলনের পথপ্রদর্শকদের অন্যতম।
বাংলাদেশের ট্রায়াথলন স্পোর্টসের বিকাশে তার অবদান অতুলনীয়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিডি ট্রাই ক্লাব ও বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাথলেটিক ও সাইক্লিং ক্লাবের উন্নয়নে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে আসছেন।
মিশু বিশ্বাস ২০২৩ সালে আয়রনম্যান অল ওয়ার্ল্ড অ্যাথলেট র্যাঙ্কিংয়ে জাতীয়ভাবে ২য় স্থান এবং ২০২৪ সালে ইনজুরির কারণে তিনি শুধু একটি রেস আয়রনম্যান ফিলিপাইনে অংশগ্রহণ করেন এবং জাতীয়ভাবে ৩য় স্থান অর্জন করেন। ২০২৩ সালে আয়রনম্যান ব্রাজিল, আয়রনম্যান মালেয়েশিয়া ও আয়রনম্যান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে অসাধারণ সাফল্যের ধারাবাহিকতায় তিনি ২০২৪ সালে আয়রনম্যান কর্তৃক সিলভার অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন। এ ছাড়া ২০২৩ সালে ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত আয়রনম্যান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করে মিশু দক্ষিণ এশীয় অ্যাথলেটদের মধ্যে ৪র্থ স্থান অর্জন করেন। বাংলাদেশ সরকার ক্রীড়াঙ্গনে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে ২০১৯ ও ২০২৪ সালে দুবার রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক প্রদান করে।
বর্তমানে মিশু বিশ্বাস নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন এবং আগামী সেপ্টেম্বরে আয়রনম্যান ৭০.৩ নিউইয়র্ক এবং অক্টোবরে শিকাগো ম্যারাথনে অংশগ্রহণের জন্য কঠোর অনুশীলন করছেন। ওই প্রতিযোগিতায় তিনি ক্যানিফোর্নিয়ায় অবস্থিত মোনা (MAUNA) ট্রাই ক্লাবকে প্রতিনিধিত্ব করবেন।
তিনি বলেন, ‘আমার চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো বিশ্বমানের এন্ড্যুরেন্স প্রতিযোগিতায় পেশাদারভাবে অংশগ্রহণ করা। আয়রনম্যান ট্রায়াথলন, চ্যালেঞ্জ সিরিজ, টি ১০০ ট্রায়াথলন রেসগুলোতে অংশগ্রহণ করা। একজন নিবেদিত চ্যানেল সাঁতারু হিসেবে আমি ইংলিশ চ্যানেল, জিব্রাল্টার প্রণালি এবং নর্থ চ্যানেলের মতো বৈশ্বিক স্বীকৃত ওপেন-ওয়াটার সাঁতারের রুট সম্পন্ন করারও স্বপ্ন দেখি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের সুবাদে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ান বংশোদ্ভূত আমেরিকান নতুন প্রজন্মের অ্যাথলেটদের নিয়ে ভবিষ্যতে আমি কাজ করতে চাই। একই সাথে দেশের উদীয়মান অ্যাথলেটদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে সহজেই আমি অনলাইনে কোচিং করাতে পারব, যা দেশের ট্রায়াথলন স্পোর্টসকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স, নাভানা, ফরচুনসহ বেশ কয়েকটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে আমাক স্পন্সর করে আসছে। আগামীতেও তারা আমার পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে।’