দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের ‘দাদাগিরি’ সহ্য করবে না পাকিস্তান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ৩০ মে ২০২৫, ২০:২৫


দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টাকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তান।। দেশটির সেনাবাহিনী প্রধান এবং ফিল্ড মার্শাল জেনারেল অসিম মুনির স্পষ্ট বার্তায় জানিয়ে দিয়েছেন, পাকিস্তান কখনো ভারতের "দাদাগিরি" সহ্য করবে না।
শুক্রবার (৩০ মে) পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অসিম মুনির বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় আমরা কখনো একতরফা আধিপত্য মেনে নেব না। শান্তির ইচ্ছা থাকলেও সার্বভৌমত্ব নিয়ে কোনো আপসের সুযোগ নেই।’
আইএসপিআর জানিয়েছে, উপাচার্য, শিক্ষাবিদ এবং সিনিয়র অনুষদ সদস্যদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত 'হিলাল টকস' নামে এক অনুষ্ঠানে ফিল্ড মার্শাল এ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, পানি আমাদের জন্য একটি রেড লাইন। এটি নিয়ে কোনো আপস হবে না।
সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে একটি হামলার প্রেক্ষিতে ভারতের পক্ষ থেকে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের ইঙ্গিত এবং পানিপ্রবাহ বন্ধের হুমকির বিষয়ে মুনির বলেন, ‘পানি ২৪ কোটির বেশি পাকিস্তানির মৌলিক অধিকার। কেউ এটিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।’
এর আগে সম্প্রতি ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে এবং পাকিস্তানের পানিপ্রবাহ বন্ধ করার হুমকি দেয়।
আসিম মুনির বলেন, যখন একটি জাতি একজোট হয়, তখন বিশ্বের কোনও শক্তিই তাকে পরাজিত করতে পারে না।”তিনি সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনাকে ‘মারকায়ে হক’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, আল্লাহ আমাদের সহায় হয়েছেন।
তিনি বলেন, পাকিস্তান ও ভারত পরস্পরের ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ভারতীয় হামলার জবাবে পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনইয়ান-উম-মারসুস’ চালিয়ে ভারতের একাধিক সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানে। এই অভিযানে পাকিস্তান ভারতের ৬টি যুদ্ধবিমান (যার মধ্যে ৩টি রাফাল) ও ডজনখানেক ড্রোন ভূপাতিত করে। পরে ১০ মে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।
কাশ্মীর ইস্যুতে তিনি জানান, এটি কোনো অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়, বরং একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা। পাকিস্তান কাশ্মীরের পাশে আছে এবং কখনোই পিছু হটবে না।
ভারতে সংখ্যালঘুদের ওপর চলমান বৈষম্য ও সহিংসতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ ভারতের অভ্যন্তরীণ সৃষ্ট সমস্যা। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে মুসলিমদের উপর দমন-পীড়ন এই উত্তেজনার মূল উৎস।’
বেলুচিস্তানে ভারত-সমর্থিত সন্ত্রাসীদের বিষয়ে তিনি বলেন, এই সন্ত্রাসীদের বেলুচদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বাইরের শক্তির ইন্ধনে কাজ করছে।
অনুষ্ঠানে তিনি শিক্ষকদের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, শিক্ষকরা জাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চরিত্র গঠনের দায়িত্বে আছেন। পাকিস্তানের ইতিহাস ও আত্মত্যাগের কাহিনি নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে।
‘হিলাল টকস’ অনুষ্ঠানে শিক্ষাবিদরা সেনাবাহিনীর প্রতি তাদের সমর্থন ও শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, এই নিরাপদ মাতৃভূমি আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর জন্যই নিরাপদ। আমরা গর্বিত এবং সবসময় তাদের পাশে আছি।