গত ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে জঙ্গি হামলার পর ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা এখন তুঙ্গে। এ অবস্থায় ভারতের কেন্দ্র সরকার বুধবার (৭ মে) ‘শত্রুপক্ষের হামলার পরিস্থিতিতে কার্যকর নাগরিক প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করতে’ একাধিক রাজ্যকে নিরাপত্তা মহড়া পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছে। ১৯৭১ সালে যখন ভারত-পাকিস্তান দুই ফ্রন্টে যুদ্ধে জড়িয়েছিল, তখন শেষবার এই ধরনের মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
১৯৭১ সালে এমন মহড়ার ফলে ভারতজুড়ে সতর্কতা জারি ছিল। এরপর এই প্রথম এমন মহড়ার নির্দেশ দিল ভারত সরকার। ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার এই সময়ে এমন পদক্ষেপের তাৎপর্য গভীর।
যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি তৈরি হলে কী করতে হবে, সে বিষয়েই প্রশিক্ষণ দিতে রাজ্যগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মহড়ার অংশ হিসেবে রাজ্যগুলোকে বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে: বিমান হামলার সতর্কতা সাইরেন চালু করা।
বেসামরিক নাগরিক ও শিক্ষার্থীদের আত্মরক্ষামূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া যাতে তারা শত্রু হামলার পরিস্থিতিতে নিজেদের রক্ষা করতে পারে।
হঠাৎ সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন বা ব্ল্যাকআউট হলে করণীয় সম্পর্কে ব্যবস্থা রাখা।
গুরুত্বপূর্ণ কারখানা ও স্থাপনাগুলো দ্রুত ছদ্মবেশে আনার বা সেগুলোর সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া।
মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা হালনাগাদ করা ও তার মহড়া চালানো।
এই মহড়ার অংশ হিসেবে পাঞ্জাবের ফিরোজাবাদে সোমবার রাত ৯টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হয়। সেনা কর্তৃপক্ষ স্থানীয় বিদ্যুৎ বিভাগকে নির্ধারিত সময়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রাখার অনুরোধ করেছিল।
এক ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড কর্মকর্তা বলেন, এই মহড়ার উদ্দেশ্য হলো বিদ্যমান যুদ্ধ হুমকির প্রেক্ষাপটে ব্ল্যাকআউট পদ্ধতির প্রস্তুতি ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করা।
পেহেলগামে জঙ্গিদের গুলিতে ২৬ পর্যটক নিহত হওয়ার পর সীমান্তে উত্তেজনা কমার কোনও লক্ষণ নেই। ভারতের দাবি, টানা ১১ রাত ধরে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ভারতীয় পোস্টে গুলি চালিয়ে যাচ্ছে। ভারত জোরালোভাবে পাকিস্তানের এই ক্রমাগত সীমান্ত লঙ্ঘনের জবাব দিয়েছে।
ইতোমধ্যে তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কাশ্মীরে হামলার বদলা নিতে সশস্ত্র বাহিনীকে পালটা আক্রমণের পূর্ণ স্বাধীনতাও দিয়েছেন তিনি।
এর মধ্যেই এবার ভারতজুড়ে বিভিন্ন রাজ্যে ৭ মে মহড়া পরিচালনার নির্দেশ দিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।