মেঘ-পাতার ভেতর দিয়েও দেখতে পারবে নতুন স্যাটেলাইট

প্রযুক্তি ডেস্ক
  ০৩ মে ২০২৫, ২৩:৪৩
আপডেট  : ০৩ মে ২০২৫, ২৩:৪৫

বিশ্বের বনজঙ্গল জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে কতটা ভূমিকা রাখছে—তা জানার নতুন পথ খুলছে ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার (ইএসএ) একটি ব্যতিক্রমধর্মী স্যাটেলাইট (কৃত্রিম উপগ্রহ)। এটি মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে।
এই উপগ্রহটির নাম ‘বায়োমাস’। এটি প্রথমবারের মতো পৃথিবীর বনাঞ্চলকে কার্যত ‘ওজন’ করতে পারবে। অর্থাৎ গাছের কাণ্ড ও শাখার ভেতর কতটা কার্বন জমা রয়েছে, তা শনাক্ত করবে। ফলে বোঝা যাবে, গ্রহকে উষ্ণতর করা কার্বন ডাইঅক্সাইডের কতটা বনজঙ্গল শোষণ করে রেখেছে।
বিশ্বের প্রায় ১ হাজার ৫০০ বিলিয়ন গাছের কার্বন মজুতের সঠিক হিসাব এতদিন পাওয়া যায়নি। কারণ মেঘ ও পত্রপল্লবের আড়াল থেকে গাছের ভেতরের কাঠামো দেখা প্রায় অসম্ভব ছিল।
এই প্রকল্পটি ইউরোপীয় মহাকাশপ্রযুক্তি সংস্থা এয়ারবাসের নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে। এতে যুক্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের এলথ্রিহ্যারিস টেকনোলজিস নামের প্রতিষ্ঠান, যারা ১২ মিটার প্রশস্ত ছাতার মতো ছড়ানো অ্যান্টেনা তৈরিতে সহায়তা করেছে।
এই দীর্ঘ-তরঙ্গ রাডারযুক্ত অ্যান্টেনা গাছের উপরিভাগ নয়, বরং শাখা ও কাণ্ডের গভীর পর্যন্ত প্রবেশ করতে সক্ষম হবে। এভাবে সিটি স্ক্যানের মতো করে গাছের অভ্যন্তরের কাঠামো বিশ্লেষণ করে বোঝা যাবে, কী পরিমাণ কাঠজাত পদার্থ রয়েছে, যা কার্বন ধারণের ইঙ্গিত দেয়।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের রিমোট সেন্সিং বিষয়ক অধ্যাপক ম্যাট ডিজনি বলেন, এতদিন আমরা গাছ পরিমাপ করতাম হাতে হাতে, তারপর তা দিয়ে অনুমান করতাম। কিন্তু সেটি বিশাল চ্যালেঞ্জ। ১ হাজার ৫০০ বিলিয়ন গাছের কার্বন ওজন মাপা সম্ভব নয়, স্যাটেলাইট ছাড়া।
উৎক্ষেপণের পর গ্রাউন্ড টিম এই উপগ্রহের পাঠানো তথ্য যাচাই করে দেখবে। সফল উৎক্ষেপণের ছয় মাসের মধ্যে প্রথম মানচিত্র প্রকাশের আশা করা হচ্ছে। এরপর নিয়মিতভাবে পাঁচ বছর ধরে কার্বন মজুত ও বন উজাড়ের তথ্য সংগ্রহ করা হবে।

সূত্র: বিবিসি