ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোয় শেনজেন ইনফরমেশন সিস্টেম (সিস) কার্যকরের ফলে বিভিন্ন রকম সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশি অভিবাসীরা। এ সমস্যা সমাধানে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে অল ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন (আয়েবা)।
গত ২৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে আয়েবার সদর দপ্তরে সিস সমস্যা সমাধানে সংগঠনটির উদ্যোগের কথা জানাতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। আয়েবার মহাসচিব কাজী এনায়েত উল্লাহর সভাপতিত্বে এতে ফ্রান্সসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের আয়েবা নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন এবং তাদের উদ্যোগের কথা মিডিয়ার সামনে তুলে ধরেন।
আয়েবা ইউরোপজুড়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বার্থ রক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সংগঠনটির ১২ বছরের সফল যাত্রায় সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানবিক কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রবাসীদের মধ্যে সংহতি, সহযোগিতা ও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে আয়েবা।
দীর্ঘ এই পথচলায় এবার আয়েবা ইউরোপের বর্তমান নিরাপত্তা ও অভিবাসন পরিস্থিতিকে সামনে রেখে নতুন ও সময়োপযোগী একটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এই উদ্যোগের কেন্দ্রে রয়েছে সিস। যা ইউরোপের অন্যতম বৃহত্তম ও সর্বাধিক ব্যবহৃত তথ্য বিনিময় ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে অনিবন্ধিত অনেক অভিবাসী, বিশেষ করে বাংলাদেশি প্রবাসীরা নানা ধরনের আইনি জটিলতা ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
অনেকে অজান্তেই বিভিন্ন দেশের আইনগত প্রক্রিয়ায় জড়িয়ে পড়ছেন। যার ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শঙ্কাও দেখা দিয়েছে।

আয়েবার পক্ষ থেকে এসআইএস সমস্যা সমাধানে জোরালোভাবে দাবি জানানো হয়েছে। বিশেষ করে ফ্রান্স, ইতালি, পর্তুগাল ও স্পেনের দায়িত্বপূর্ণ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ চলছে এবং আয়েবা ডেলিগেশন অচিরেই তাদের সাথে সরাসরি আলোচনায় বসবে বলে জানিয়েছেন কাজী এনায়েত উল্লাহ।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আয়েবার মহাসচিব কাজী এনায়েত উল্লাহসহ সহসভাপতি ফকরুল আকম সেলিম (ফ্রান্স) এবং মাহারুল ইসলাম মিন্টু (স্পেন), বিজনেস অ্যাফেয়ার্স সেক্রেটারি সুব্রত ভট্টাচার্য শুভ, নির্বাহী সদস্য আজহার কবির বাবু, এমদাদুল হক স্বপন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে ফকরুল আলম সেলিম বলেন, অতীতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বার্থ রক্ষায় আয়েবা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এসআইএস সমস্যা সমাধানে এবারও আমরা সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হব।
আয়েবার প্রেসিডেন্ট ড. জয়নুল আবেদীনের নির্দেশনায় মহাসচিব কাজী এনায়েত উল্লাহ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমরা আশা করি, সংশ্লিষ্ট ইউরোপীয় দেশসমূহ এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং ইউরোপ প্রবাসী বাংলাদেশিদের বর্তমান সংকট সমাধানে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। ইতোমধ্যে আমরা চারটি দেশের সরকারের সাথে যোগাযোগ করেছি। শীঘ্রই তাদের সাথে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করতে পারব বলে আশাবাদী।
উল্লেখ্য, সিস হচ্ছে ইউরোপে নিরাপত্তা ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনার জন্য সর্বাধিক ব্যবহৃত এবং বৃহত্তম তথ্য ভাগাভাগি ব্যবস্থা। এটি শেনজেন-সম্পর্কিত দেশগুলোয় সীমান্ত, অভিবাসন, পুলিশ, কাস্টমস ও বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের জন্য সবচেয়ে সফল সহযোগিতার পদ্ধতি।