কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস ও গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা নিয়ে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া অ্যাক্টিভিস্ট মাহমুদ খলিল জামিনে ছাড়া পেয়েছেন।
গত ৮ মার্চ আটক করার পর তাকে লুইজিয়ানার একটি আটককেন্দ্রে রাখা হয়েছিল। ৩০ বছর বয়সী এ ফিলিস্তিনি গত বছর গাজা যুদ্ধের সময় কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে হওয়া তুমুল আন্দোলনের অন্যতম মুখ হয়ে উঠেছিলেন।
শুক্রবারের আদেশে নিউ জার্সির ফেডারেল বিচারক মাইকেল ফারবিয়ারজ বলেন, খলিল পালিয়ে যেতে পারেন এমন ঝুঁকি নেই এবং তিনি যেখানে থাকেন সেখানকার লোকজনের জন্যও হুমকি নন, তাই তার অভিবাসন প্রক্রিয়া যাচাই-বাছাই চলাকালে তাকে মুক্তি দেওয়া যেতে পারে।
এ সময় তাকে ইলেকট্রনিক পর্যবেক্ষক যন্ত্র পরতে হবে না এবং তিনি তার পাসপোর্ট ও গ্রিনকার্ডের সত্যায়িত অনুলিপি পাবেন। এগুলোর সাহায্যে তিনি বাড়ি ফিরতে পারবেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মার্কিন সরকার তার পাসপোর্ট তাদের হেফাজতে রাখবে। আদালত খলিলের আন্তর্জাতিক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা রেখে তাকে আদালতে উপস্থিতি ও আইনি দৌঁড়ঝাপের জন্য দেশের ভেতর নিউ ইয়র্ক, মিশিগান, নিউ জার্সি, লুইজিয়ানা ও ওয়াশিংটনে যাওয়ার অনুমতি দিতে বলেছেন।
খলিলকে আটক করার ঘটনায় নিউ ইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসিতে বিক্ষোভ হয়েছিল।সিরিয়ায় এক ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে জন্ম নেওয়া খলিলের আলজেরিয়ার নাগরিকত্ব আছে। গত বছর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি পান। তার স্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
এ ফিলিস্তিনির কার্যক্রমকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির জন্য ‘প্রতিকূল’ অভিহিত করেছে ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এ কারণে তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানিয়েছিল তারা।
লুইজিয়ানার আটক কেন্দ্র থেকে বের হয়ে নিউ ইয়র্কে নিজের বাড়িতে রওনা দেওয়ার আগে সাংবাদিকদের খলিল জানান, স্ত্রী নূর ও সদ্য জন্ম নেওয়া ছেলের সঙ্গে দেখা করতে উন্মুখ হয়ে আছেন তিনি।
খলিল যে ১০৪ দিন আটক ছিলেন, সে সময়েই তার ছেলে দীন জন্মায়।
“আমি কেবল এক ঘণ্টা আমার সন্তানের সঙ্গে কাটাতে পেরেছিলাম, ওইটুকু সময়ই কেবল সরকার দিয়েছিল।
“এখন আমি ঘড়ির দিকে না তাকিয়েই তাকে ও আমার স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে রাখতে পারবো,” বলেছেন তিনি।
গাজায় ইসরায়েলি কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় ট্রাম্প প্রশাসন যে তাকে আটক করেছিল, তা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি।
বলেছেন, “গণহত্যার বিরোধিতা করায় কাউকে আটক করার অধিকার থাকতে পারে না।”
এদিকে এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র অ্যাবিগেইল জ্যাকসন মাহমুদ খলিলের বিরুদ্ধে ‘প্রতারণা ও ভুল তথ্য দেওয়ার’ অভিযোগ এনেছেন। তিনি বলেন, খলিল এমন কাজ করেছেন যা মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির স্বার্থের পরিপন্থি।
হোয়াইট হাউজ বলছে, বিচারক মাইকেল ফারবিয়ার্জের খলিলকে মুক্তি দেওয়ার এখতিয়ার রাখেন না।
“আপিলে আমাদের পক্ষে রায় আসবে বলে আশা করছি, আর খলিলকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়ার অপেক্ষায় আছি," বলেছেন তিনি।