ডাকসু নির্বাচন

ভোটার হয়েও ভোট দিতে পারেননি ক্রীড়াঙ্গনের যেসব তারকারা

স্পোর্টস ডেস্ক
  ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:১৩

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে বলা হয় দেশের দ্বিতীয় সংসদ। ছয় বছর পর আয়োজিত এ নির্বাচনে সারা দেশের দৃষ্টি ছিল ভোটের ফলের দিকে। তবে অনেক তারকা ক্রীড়াবিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হয়েও নানা কারণে ভোট দিতে পারেননি।
জাতীয় ফুটবল দলের তারকা ফরোয়ার্ড শেখ মোরসালিন ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি ডাকসুর ভোটার হলেও জাতীয় দলের হয়ে খেলতে ভিয়েতনামে থাকায় ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি। ভিয়েতনাম থেকে নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে বলেন, খুব ইচ্ছে ছিল ভোট দেওয়ার। কিন্তু আন্তর্জাতিক ম্যাচ থাকায় ক্যাম্পাসে থাকা সম্ভব হয়নি। ভোট দিতে না পারায় খারাপ লাগছে, তবে আজ গোল করেছি ও তিনটি গোল করিয়েছি; দেশ জেতায় কিছুটা সান্ত্বনা মিলেছে।
জাতীয় ক্রিকেট দলের ব্যাটার তাওহিদ হৃদয়ও ছিলেন ভোটার। তবে এশিয়া কাপে অংশ নিতে দুবাইয়ে অবস্থান করায় তিনিও ভোট দিতে পারেননি। একইভাবে নারী ফুটবল দলের তারকা ঋতুপর্ণা চাকমাসহ কয়েকজন ফুটবলার ভুটানে লিগ খেলায় ব্যস্ত থাকায় ভোট দেওয়া হয়নি। 
অন্যদিকে জাতীয় নারী দাবার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন নোশিন আঞ্জুম, যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী, ঢাকায় থেকেও ভোট দিতে যাননি। কারণ, জাতীয় দাবার বাছাই প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ায় সকালে অনুশীলন শেষে আর ভোটকেন্দ্রে যাওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে নোশিনেরই সিনিয়র ও জাতীয় নারী টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়ন সাদিয়া রহমান মৌ ভোট দিয়েছেন। জীবনের প্রথম ভোট দিয়ে তিনি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, সুন্দর পরিবেশে বন্ধুদের সঙ্গে ভোট দিলাম। ক্রীড়াবিদ হিসেবে আশা করি নির্বাচিত ক্রীড়া সম্পাদক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনডোর গেমসসহ সামগ্রিক খেলার পরিবেশ উন্নত করবেন।
প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরের জন্য পরিচিত মৌ টেবিল টেনিসের বাইরে নারী ক্রীড়াঙ্গনের অধিকার নিয়েও সোচ্চার। তবে এবার ক্রীড়া সম্পাদক পদে প্রার্থী না হওয়ার কারণ জানাতে গিয়ে বলেন, আমি এখনো দ্বিতীয় বর্ষে। টিটি খেলা আর পড়াশোনাতেই ব্যস্ত সময় কাটছে। নেতৃত্ব দেওয়া আলাদা দায়িত্ব, যা নিয়ে এখনো ভাবিনি। সামনে সুযোগ এলে ভেবে দেখা যেতে পারে।
অলিম্পিয়ান আর্চার দিয়া সিদ্দিকীও একসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে থাকলেও ডাকসু নির্বাচন নিয়ে সোচ্চার রয়েছেন। ক্রীড়া সম্পাদক প্রার্থী জামির পক্ষে ফেসবুকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, সত্তর ও আশির দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলোয়াড় কোটা চালু ছিল। তবে অনিয়মের কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর বিকেএসপি শিক্ষার্থী ও ভর্তি পরীক্ষায় নির্দিষ্ট নাম্বারপ্রাপ্তদের মাধ্যমেই ভর্তি হত। ২০২৩ সাল থেকে জাতীয় পর্যায়ের খেলোয়াড়দের সরাসরি ভর্তি করার সুযোগ চালু হওয়ায় গত কয়েক শিক্ষাবর্ষে বহু ক্রীড়াবিদ প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছেন।