পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্দেশে মোবাইল ফোনে ব্যবহৃত ব্যয়ের ওপর আরোপিত ১ শতাংশ সারচার্জ আদায় কেন বন্ধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ভোক্তা অধিকার সংস্থা ‘কনশাস কনজ্যুমার্স সোসাইটি’র (সিসিএস) এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (১৮ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মো. হামিদুর রহমানের বেঞ্চ (এনেক্স-২৪) এ রুল জারি করেন।
এদিন রিট আবেদনকারীদের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী এ কে এম আজাদ হোসেন।
এর আগে গত ১০ জুলাই সিসিএসের পক্ষ থেকে রিট আবেদন করেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ।
গত ৪ জুন আইনি পদক্ষেপের প্রথম ধাপ হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সচিব, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান, গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি এবং টেলিটক কর্তৃপক্ষকে এ নোটিশ পাঠায় সিসিএস।
নোটিশে প্রতিষ্ঠানগুলোকে সাতদিনের মধ্যে সারচার্জ বন্ধ করার দাবি জানানো হয়।
নোটিশে বলা হয়, পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের থেকে মোবাইলে খরচের ওপর ১ শতাংশ সারচার্জ চালু রয়েছে।
২০১৬ সালে ওই সারচার্জ আরোপ করা হয়, যা বর্তমানে অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে এ সারচার্জের মাধ্যমে ভোক্তাদের থেকে দুই হাজার কোটি টাকার বেশি আদায় করা হয়েছে; কিন্তু ২০২২ সালে পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হলেও মোবাইল ফোনে সারচার্জ কর্তন বন্ধ করা হয়নি।
নোটিশে আরও বলা হয়, পদ্মা সেতু নির্মাণে ভোক্তাদের থেকে সারচার্জ কর্তনের জন্য ২০১৫ সালে ‘উন্নয়ন সারচার্জ ও লেভি (আরোপ ও আদায়) আইন’ করে সরকার। ওই আইনের অধীনে ২০১৬ সালের ১০ মার্চ অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে সারচার্জ আদায় শুরু করে সরকার।
তবে আইনের ৪নং ধারায় বলা হয়েছে, সরকার, সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা, তৎকর্তৃক আরোপিত শর্তে ও নির্ধারিত মেয়াদে উন্নয়ন সারচার্জ আদায় করতে পারবে। কিন্তু প্রজ্ঞাপনে কোনো মেয়াদ নির্দিষ্ট না করেই সারচার্জ আদায় শুরু হয়। ফলে সারচার্জ আদায় ৯ বছর চললেও তা বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নেই, যা আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ায় এবং মেয়াদ নির্দিষ্ট না করে বেআইনিভাবে সারচার্জ আদায়ের মাধ্যমে ভোক্তার স্বার্থ ক্ষুণ্ন হচ্ছে। ফলে ভোক্তা অধিকার সংস্থা হিসেবে সিসিএস এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে বলেও নোটিশে জানানো হয়।