ভুয়া সমন্বয়ক সেজে কোটি টাকার মালিক সরোয়ার

ডেস্ক রিপোর্ট
  ১৭ আগস্ট ২০২৫, ১৩:০৬

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর ফুলেফেঁপে উঠেছে মো. সরোয়ার (৩৩)। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন দপ্তর থেকে কাজ ভাগিয়ে নিয়েছেন। এই সময়ে বদলির তদবির করে অবৈধ উপায়ে গড়েছেন কোটি কোটি টাকার সম্পদ।
বরগুনা এলজিইডি অফিসের দুই কর্মকর্তা সহ অনেক দপ্তরের কর্মকর্তাদের বদলি করেছেন মোটা অংকের বিনিময়ে। নিজেকে পরিচয় করিয়েছেন সমন্বয়ক হিসেবে।
জানা গেছে, এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভুয়া নেতা সেজে ভয় দেখিয়ে এলজিইডি বিভাগ, জনস্বাস্থ্য বিভাগ সহ অনেক দপ্তর থেকে কোটি কোটি টাকার কাজ ভাগিয়ে নিয়েছেন সরোয়ার। বর্তমানে বরগুনা জনস্বাস্থ্য বিভাগ থেকে নিজের লাইসেন্স না থাকায় ভাড়াকৃত লাইসেন্স দিয়ে তিনটি কাজ নিয়েছেন। সেখানে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে ৫০টি গভীর নলকূপ ও একটি লেট্রিন এর কাজ।
তাছাড়া এই সরোয়ার তিনি বিভিন্ন পরিচয় দিয়ে চলছেন। কখনো সোহাগ, স্বপন ও কখনো সুমন নামে বিভিন্ন দপ্তরে পরিচয় দিয়ে আসছেন।
স্থানীয়রা জানান, এই সরোয়ার চান্দখলী কদভানু মেমোরিয়াল বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষক ছিলেন। সেখানের দশম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে জোর করে ধর্ষণ করেন। পরে সেখানে একটি মামলা হয়। পরে এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। সেই মামলায় সরোয়ার একজন আসামি। সে কিভাবে সমন্বয়ক হয়! এখন শোনা যাচ্ছে তিনি এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা।
মামলা সূত্রে জানা যায়, এনসিপির ভুয়া এই নেতা মো. সরোয়ার ২০২২ সালে বেতাগী উপজেলার চান্দখালীর কদভানু মেমোরিয়াল বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজে শিক্ষক থাকা অবস্থায় একই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর এক শিক্ষার্থীকে জোর করে ধর্ষণ করে। পরে গত ২২ সালের মার্চ মাসে বেতাগী থানায় তার নামে একটি মামলা রুজু হয়। যার মামলা নং ১১। সেই মামলায় তিনি এজাহারভুক্ত একজন আসামি। 
শিক্ষার্থী অভিযোগ দিলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে তাকে  ওই স্কুল থেকে চূড়ান্তভাবে অব্যহতি দেওয়া হয়।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরগুনার অন্যতম নেতা রেজাউল করিম জানান, সরোয়ার নামের এনসিপির কেন্দ্রীয় কোন নেতা আছে কিনা আমার জানা নেই। এনসিপির কেন্দ্রীয় সকল নেতাকে আমি চিনি। সরোয়ার নামের এনসিপির কেন্দ্রীয় কোন নেতা নেই। এটা শতভাগ নিশ্চিত। গত ৫ই আগস্টের পর থেকে এরকম ভুয়া অনেক নেতা বের হইছে। যাদের কাজই হচ্ছে মানুষকে হয়রানি করে স্বার্থ হাসিল করা। এসব ভুয়া নেতাদেরকে আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে।
এ বিষয়ে মো. সরোয়ারের কাছে জানতে চাইলে তিনি যুগান্তরকে জানান, আমি কোন এনসিপির নেতা নই। একটি মাদ্রাসার শিক্ষক। বরগুনার প্রায় সব লোকে আমাকে চিনে। প্রেসক্লাবের সোহেল ভাই, জাফর ভাই,আরিফ ভাইসহ অনেকে। আমি একটু লেখালেখিও করি দৈনিক সকালের সময়ে। তাছাড়া আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ উঠেছে তা সম্পুর্ণ মিথ্যা।

তথ্য সূত্র: যুগান্তর