রূপপুর প্রকল্পে পারমাণবিক জ্বালানি লোডের প্রস্তুতি চূড়ান্ত ধাপে পৌঁছেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী নভেম্বরে প্রথম ইউনিটে জ্বালানি লোড করা হবে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ শুরু হতে পারে ‘স্টার্ট আপ’ অর্থাৎ উৎপাদন শুরুর প্রক্রিয়া।
পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ইউনিট-১-এ জ্বালানি লোডিংয়ের আগে নিরাপত্তা পর্যালোচনার জন্য আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) এর প্রি-ওসার্ট (পারমাণবিক প্রকল্পের উৎপাদন শুরুর আগের পর্যবেক্ষণ) দল কার্যক্রম শুরু করেছে।
প্রি-ওসার্ট টিমের ১৫ সদস্যের দলের নেতৃত্বে আছেন আইএইএর সিনিয়র নিউক্লিয়ার সেফটি অফিসার সাইমন ফিলিপ মরগান। আইএইএ-র অপারেশনাল সেফটি সেকশন হেড জুরাজ রোভনি ডেপুটি টিম লিডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, প্রি-ওসার্ট টিম নেতৃত্ব এবং ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা, প্রশিক্ষণ এবং যোগ্যতা, পরিচালনা প্রস্তুতি, রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থা, প্রকল্পের প্রযুক্তিগত দিক, পরিচালনা অভিজ্ঞতা ও প্রতিক্রিয়া, বিকিরণ সুরক্ষা ব্যবস্থা, রসায়ন, জরুরি প্রস্তুতি, প্রতিক্রিয়া, দুর্ঘটনা ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা এবং কমিশনিং প্রক্রিয়া পর্যালোচনা করবে।
আইএইএর টিম রোববার সকালে প্রকল্পের বিভিন্ন স্থানে কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. জায়েদুল হাসান। আগামী ২৭ আগস্ট পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে। আইএইএ টিমের প্রি-ওসার্ট মিশনের রিপোর্টের ওপর ইউনিট-১ এর পারমাণবিক জ্বালানি (ইউরেনিয়াম) লোডিংয়ের প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হবে।
তিনি আরও বলেন, সব প্রস্তুতি শেষে রাশিয়া থেকে সরবরাহকৃত ১৬৩টি ফুয়েল অ্যাসেম্বলি (ইউরেনিয়াম) রিঅ্যাক্টর কোরে স্থাপন করা হবে। এ প্রক্রিয়াকে বলা হয় ‘জ্বালানি লোডিং’। এ কার্যক্রমের জন্য আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা এবং বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চূড়ান্ত অনুমোদন লাগবে।
প্রকল্পের সাইট ডিরেক্টর প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম জানান, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইউনিট-১-এ জ্বালানি লোডিংয়ের কার্যক্রম শুরু করার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। যে কারণে প্রি-ওসার্ট মিশন পরিচালনা করা প্ল্যান্টের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় ১২.৬৫ বিলিয়ন ডলারের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলায় নির্মিত হচ্ছে। দুটি ভিভিইআর-১২০০ চুল্লি থাকবে। প্রতিটির উৎপাদন ক্ষমতা হবে ১,২০০ মেগাওয়াট। প্ল্যান্টের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী আইএইএর-এর প্রি-ওসার্ট মিশন প্রথম জ্বালানি লোডের তিন থেকে ছয় মাস আগে পরিচালিত হয়।