ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ঢাকাবাসী। নতুন কর্মসূচি অনুযায়ী আগামী শনিবার সকাল ১০টায় নগর ভবন থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাব হয়ে সচিবালয় পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) ডিএসসিসির নগর ভবনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি থেকে নতুন এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
এদিন দুপুর ২টার দিকে ঢাকাবাসীর পক্ষ থেকে বলা হয়, আগামী শনিবার সকাল ১০টায় নগর ভবন থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাব হয়ে সচিবালয় পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করা হবে।
এর আগে ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ পাঠ না করানোয় গতকাল বুধবার বিক্ষোভ সমাবেশ করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার বাসিন্দারা। গত নয় মাস নানান সংকট এবং অব্যবস্থাপনায় দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নাগরিক অসুবিধার জেরে এবার ক্ষোভ প্রকাশ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি দিয়েছেন তারা।
এরপর আজ বৃহস্পতিবার সকাল নয়টা থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচিতে অংশ নেন কয়েক হাজার নগরবাসী। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের সামনে অবস্থান নেন বিক্ষোভকারীরা। মূল ফটকের ভেতর ও বাইরে অবস্থান নিয়ে তারা শপথ পড়াতে বিলম্ব হওয়ার প্রতিবাদ জানান। এসময় তারা নানান স্লোগান দেন। ‘অবিলম্বে ইশরাক হোসেনের শপথ চাই, দিতে হবে’, ‘জনতার মেয়র ইশরাক ভাই, অন্য কোনো মেয়র নাই’, ‘রায় দিয়েছে আদালত, বাধা দেওয়ার তুই কে’, ‘আমাদের মেয়র আমরাই বানাবো’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গত ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নগর ভবনের সামনে অবস্থানকারী বিক্ষোভকারীরা জানান, এখন পর্যন্ত ইশরাকের শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই তারা ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে গতকাল থেকে বিক্ষোভ করছেন।
তারা বলেন, আদালতের রায় ও নির্বাচন কমিশনের গেজেট অনুযায়ী ইশরাক হোসেন বৈধ মেয়র। এরপরও কেন তাকে এখনো শপথ পড়ানো হয়নি, তার ব্যাখ্যা চাই।
এসময় তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে জানান, যতদিন ইশরাক হোসেনকে দায়িত্ব না দেওয়া হবে, ততদিন তারা নগর ভবনের সামনে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি দেবেন।
ঢাকাবাসীর এ অবস্থান কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন ঢাকা দক্ষিন সিটি করপোরেশনের সাধারণ কর্মচারীরা। সকাল থেকে সব কার্যক্রম বন্ধ করে তারাও অবস্থান নেন। সব গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে নগর ভবনের নিচতলায় স্টেজ করে অবস্থান কর্মসূচি চালাতে থাকেন তারা। এতে ঢাকার বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক এবং সচেতন নাগরিক সমাজের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
গত ২৭ মার্চ ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে রায় দেন নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল। ঈদের পর ১৬ এপ্রিল পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে ১০ দিনে মধ্যে গেজেট প্রকাশের জন্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেন আদালত। ২২ এপ্রিল ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে গেজেট প্রকাশ করা নিয়ে আইনগত কোনো জটিলতা আছে কি না- সে বিষয়ে মতামত চেয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায় নির্বাচন কমিশন। আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের অপেক্ষায় থেকে নির্ধারিত ১০ দিনের শেষ দিন ২৭ এপ্রিল রাত ৯টায় আইন মন্ত্রণালয়ের মৌখিক অনুমতি নিয়ে গেজেট প্রকাশ করে ইসি।
পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য ২৮ এপ্রিল সেই গেজেট স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠায় ইসি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে আবারও আপিলের জন্য পাঠানো হয় নির্বাচন কমিশনে। এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন আপিল করবে না বলে জানিয়ে দেয়।