আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল ও ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতাকর্মীরা। এতে কিছু জায়গায় কয়েক কিলোমিটারজুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে।এসময় তীব্র গরমে জনগণ চরম ভোগান্তির স্বীকার হয়েছে ।
"আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ দাবিতে শ্যামলীতে ব্লকেড"
আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত ও দলটি নিষিদ্ধসহ তিন দাবিতে রাজধানীর শিশুমেলা সড়ক আটকে দিয়ে আন্দোলন করছেন জুলাই আন্দোলনে আহতরা। ফলে শ্যামলী থেকে ধানমন্ডিগামী একমুখী সড়কে বন্ধ রয়েছে যান চলাচল। দীর্ঘ যানজটে চরম ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ।
শনিবার (১০মে) দুপুর ১টার পর সড়ক অবরোধ করেন তারা। এসময় আন্দোলনকারীরা সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দিয়েছে।
ফলে যান চলাচল বন্ধে দীর্ঘ যানজটে গন্তব্যগামী সাধারণ মানুষকে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে রওয়ানা দিতে হচ্ছে।
আবু জাফর নামে পল্টনগামী এক যাত্রী বলেন, দুদিন পর পর কিছু হলেই রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন। এমন ভাবে চলতে থাকলে সাধারণ মানুষ কীভাবে চলাচল করবে? মানুষের প্রয়োজনীয় কাজ থাকে না?
মাহবুব শেখ নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, আন্দোলনের নামে সড়ক বন্ধ করে যা শুরু করেছে এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়।
এর আগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বৃহস্পতিবার (৭ মে) রাত ১০টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। পরে সেখানে যান এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেনসহ দলটির শীর্ষ নেতারা।
এছাড়া জামায়াত, ছাত্রশিবির, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, ইনকিলাব মঞ্চ, আপ বাংলাদেশসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীরা হাসনাত আব্দুল্লার ডাকে সাড়া দিয়ে রাতেই যমুনার সামনে যান। পরে শুক্রবার দুপুরে যমুনা সংলগ্ন এলাকায় মঞ্চ বানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধসহ তিন দফা দাবি
১. আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করতে হবে।
২. আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে আওয়ামী লীগের দলগত বিচারের বিধান যুক্ত করতে হবে।
৩. জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে।
"আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে খুলনায় ব্লকেড কর্মসূচি"
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে খুলনার শিববাড়ি মোড়ে ব্লকেড কর্মসূচি পালন হয়েছে। শনিবার (১০ মে) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এ কর্মসূচি পালন হয়।
এসময় খুলনা-যশোর মহাসড়ক, শিববাড়ি থেকে সোনাডাঙ্গা, ময়লাপোতা, রূপসা সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ব্লকেড কর্মসূচিতে অংশ নেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী আন্দোলন, ইসলামী ছাত্রশিবির, ইসলামী ছাত্র ও যুব আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক কমিটি, দ্যা রেড জুলাইসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এনসিপির সংগঠক আহম্মদ হামীম রাহাত বলেন, খুনি হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও শুধুমাত্র ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হয়েছে। বার বার দাবি জানানোর পরও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়নি। সাধারণ মানুষ দলটিকে রাজনীতিতে আর দেখতে চায় না। এবার আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করেই এ আন্দোলন থামবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক ও খুলনা জেলা সদস্য সচিব সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা ১৬ বছর সাধারণ মানুষের ওপর অমানবিক জুলুম-নির্যাতন করেছেন। তার দল আওয়ামী লীগ খুনের রাজত্ব করেছে। জুলাই আন্দোলনে নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়েছে। এরপরও এ দলটিকে নিষিদ্ধ করা হয়নি। এবার আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না করা পর্যন্ত রাজপথে থাকবো।
বক্তব্য রাখেন ছাত্রশিবিরের খুলনা মহানগর সেক্রেটারি রাকিব হাসান, ইসলামী আন্দোলনের খুলনা মহানগর সহ-সভাপতি শেখ মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের খুলনা মহানগর সভাপতি মাহাদী হাসান মুন্না, রেড জুলাইয়ের বিভাগীয় আহ্বায়ক মো. তারেক, জাতীয় নাগরিক কমিটির সংগঠক মুশফিকার সামস মেনান, জাতীয় নাগরিক কমিটির সোনাডাঙ্গা থানার সদস্য ফরিদ আহমেদ পাঠান, সামরিক বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম, জাতীয় নাগরিক কমিটির খানজাহান আলী থানা সদস্য জায়েদুর রহমান প্রিন্স।
"নওগাঁয় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ"
নওগাঁয় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণসহ তিন দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ছাত্র-জনতা। শনিবার (১০ মে) বিকেল ৫টার দিকে শহরের কাজীর মোড়ে দুই ঘণ্টা অবস্থান নেন তারা। এসময় সড়কের এক পাশের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বিক্ষোভ সমাবেশে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট কাজী আতিকুর রহমান, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নওগাঁর অন্যতম সংগঠক দেওয়ান মাহবুব হাসান সোহাগ, বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন নওগাঁর সভাপতি মাস্টার মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম, জাতীয় আগ্রাসন প্রতিরোধ মঞ্চ নওগাঁর সভাপতি কাজী মহিউদ্দিন আলমগীর, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নওগাঁর সমন্বয়ক আরমান হোসেন, ফজলে রাব্বি এবং সাদনান সাকিব প্রমুখ রাখেন।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নওগাঁর সমন্বয়ক আরমান হোসেন বলেন, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট হাসিনাকে দেশ ছাড়া করার মাধ্যমে এদেশের জনগণ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের রায় দিয়ে দিয়েছে। আমাদের ভাইদের রক্তের ওপর পা দিয়ে যে অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা ক্ষমতায় বসিয়েছি তারা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের তালবাহানা করছে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলতে থাকবে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি নওগাঁর অন্যতম সংগঠক দেওয়ান মাহবুব হাসান সোহাগ বলেন, জুলাই আগস্টের রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটিয়েছি। ৫ আগস্টের পর দশ মাস পেরিয়ে গেলেও সরকার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। যা আমাদের জন্য অত্যন্ত হতাশাজনক। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে এটি একটি জনদাবি, এই দাবি নিয়ে আমাদের কেনো রাস্তায় নামতে হবে। আমরা চাই দ্রুত নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে যেনো আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়।
"সিলেটে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সড়ক অবরোধ"
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সিলেটে চলছে গণজমায়েত। শনিবার (১০ মে) বিকেল ৩টা থেকে নগরীর চৌহাট্টা এলাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে অবস্থান নেন ছাত্র-জনতা।
বিকেল ৩টায় কর্মসূচি ঘোষণা করা হলেও দুপুর আড়াইটা থেকে শহীদ মিনার এলাকায় জড়ো হতে শুরু করে মানুষ। বিকেল ৩টার দিকে নানা শ্রেণিপেশার মানুষের জড়ো হলে বন্ধ হয়ে যায় চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার সড়কের একপাশ দিয়ে যান চলাচল। এতে ভোগান্তিতে পড়েন এই সড়কের যাত্রীরা।
জুলাই জাতীয় ঐক্যের ব্যানারে গণজমায়েত কর্মসূচিতে অংশ নেয় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত তারা সড়ক ছাড়বেন না। সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। এই বৈঠক থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা না হলে কোনো অবস্থাতেই সড়ক ছাড়বেন না।
এদিকে, চৌহাট্টা গণজমায়েত থেকে আওয়ামী লীগ সন্দেহে এক যুবককে গণপিটুনি দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। শনিবার বিকেল ৫টায় কর্মসূচি চলাকালে সড়কে হেটে যাওয়ার সময় তাকে গণধোলাই দেওয়া হয়। গণপিটুনির শিকার যুবক সুনামগঞ্জে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানান আন্দোলনকারীরা। একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যান।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক বলেন, গণপিটুনির শিকার এক ব্যক্তিকে পুলিশ উদ্ধার করেছে। তার বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায়। তবে আটক ব্যক্তি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
"আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে জয়পুরহাটে বিক্ষোভ মিছিল"
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে জয়পুরহাটে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি।
শনিবার (১০ মে) বিকেলে শহরের শহীদ ডা. আবুল কাশেম ময়দান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জিরো পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়।
পরে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নাগরিক পার্টির জেলা সংগঠক আশরাফুল ইসলাম, ওমর আলী বাবু, বোরহান হোসেনসহ আরও অনেকই।
বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ বিগত ১৬ বছর এ দেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করে জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে।
তারা বলেন, ভারতের প্রেসক্রিপশনে দেশ পরিচালনা করেছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হাজার হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছে। তাদের এদেশে রাজনীতি করার অধিকার নেই। রাজপথে সেই ফয়সালা হয়ে গেছে।
"আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল ইবি"
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। শনিবার (৯ মে) বিকেল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক সংলগ্ন শেখপাড়া বাজার ঘুরে প্রশাসন ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় সমন্বয়ক এস এম সুইটের নেতৃত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, সহ-সমন্বয়ক তানভীর মণ্ডল ও ইয়াসিরুল কবির সৌরভ। এছাড়াও তলাবায়ে আরাবিয়ার সাধারণ সম্পাদক এস এম শামিম, ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীসহ প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, জুলাই আন্দোলন যেভাবে ধৈর্যের সঙ্গে আমাদের চালাতে হয়েছে এ আন্দোলনও তেমনি চালিয়ে যেতে হবে। আমরা দেখছি কিছু চাওয়া পাওয়া, বুঝা-পোড়ার কারণে আওয়ামী প্রশ্নে অনেকে নমনীয়তা দেখাচ্ছে। আমরা আশা করি জুলাই আন্দোলনে তারা যেভাবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আন্দোলন করেছে সে কাজটি করবে। আসলে ৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হয়ে গেছে শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতা বাকি। জুলাই গণহত্যা চালিয়ে তারা তাদের বেঁচে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে। তাই ইন্টেরিমকে অতিদ্রুত আমাদের তিন দফা দাবি মেনে নিতে হবে।
আমাদের দাবি আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করতে হবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে আওয়ামী লীগের দলগত বিচারের বিধান যুক্ত করতে হবে। জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে।
"আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে মৌলভীবাজারে বিক্ষোভ"
আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধসহ ৩ দফা দাবিতে মৌলভীবাজারে সড়কে অবস্থান করে বিক্ষোভ করছে এনসিপি ও ছাত্র-জনতা।
শনিবার (১০ মে) দুপুর ১টা থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টি ও সর্বদলীয় ছাত্র-জনতার ব্যানারে শহরের প্রেস ক্লাব পয়েন্টে জাতীয় পতাকা নিয়ে অবস্থান নেন তারা।
এর আগের দিন মৌলভীবাজার শহরের চৌমুহনা পয়েন্ট অবরোধ করে রাখেন এনসিপি, ছাত্রশিবিরসহ বিভিন্ন সংগঠনের আন্দোলনকারীরা।
এতে সড়কের দুই পাশে তীব্র যানজট দেখা দেয়। পরে সেনাবাহিনী এসে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। এসময় বিক্ষোভকারীরা স্লোগানে স্লোগানে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও বিচারের দাবি জানান।
মৌলভীবাজার শহর ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি কাজী দাইয়ান আহমদ বলেন, আমরা দেখছি, গণঅভ্যুত্থানের দীর্ঘ ৮ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের কোনো কার্যকলাপ চোখে পড়ার মতো নেই। আমরা দেখতে পাই, আমাদের চোখের সামনে দিয়ে বিগত সরকারের খুনিরা বিদেশে চলে যাচ্ছেন। প্রশাসনের ভাইয়েরা বসে বসে নাটক সাজাচ্ছেন। আমরা স্পষ্ট বলে দিতে চাই, জুলাই-আগস্টে যে অভ্যুত্থান ছাত্র-জনতা করেছিল, এখনো সেই ছাত্র-জনতা ঘরে ফিরে যায়নি।
জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য শাহীন ইকবাল বলেন, গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশের মাটিতে কোনোভাবেই রাজনীতি করার অধিকার রাখে না। তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে, বিচারের আওতায় আনতে হবে।
"আ’লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা-কিশোরগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ"
আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের দাবিতে কিশোরগঞ্জে পাকুন্দিয়ায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ হয়েছে। শনিবার (১০ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সর্বদলীয় ছাত্র-জনতার ব্যানারে উপজেলা সদর ঈদগাহের সামনে কিশোরগঞ্জ-ঢাকা সড়ক অবরোধ করা হয়। এতে সড়কের দুই পাশে তীব্র যানজট দেখা দেয়।
এসময় বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন স্লোগানে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও বিচারের দাবি জানান। এছাড়াও বিগত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগের অত্যাচার, নির্যাতন ফ্যাসিবাদী কায়েম ব্যবস্থার কথা তুলে ধরেন।
কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রশিবিরের ছাত্র-আন্দোলন সম্পাদক এইচ এম ফরহাদ ভূঁইয়া বলেন, যে শেখ হাসিনা পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে গণহত্যা চালিয়েছে তাদের রাজনীতি বাংলাদেশে হতে দেওয়া যাবে না। যারা তিনটি অবৈধ নির্বাচন করেছে বিনা ভোটের মাধ্যমে এ দেশের লক্ষ-কোটি মানুষের অধিকার হরণ করেছে তাদের বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। ফেরাউনের চরিত্রে আবির্ভাব হয়ে শেখ হাসিনা এ দেশের দুই হাজারের অধিক ছাত্র-জনতাকে নির্বিচারে হত্যা করেছে। তাই তাদের রাজনীতি বাংলাদেশে করতে দেওয়া হবে না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন পাকুন্দিয়া উপজেলা শাখার আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল-সানী বলেন, গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশের মাটিতে কোনোভাবেই রাজনীতি করার অধিকার রাখে না। তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে, বিচারের আওতায় আনতে হবে। আপনারা দেখেছেন আওয়ামী লীগের সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।
এসময় ছাত্রশিবির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী ও সাধারণ জনতা মানুষ উপস্থিত ছিলেন।